সি.এ.এ এর জেরে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরা শুরু, গ্রেফতার ৩০০ জন

ভারতীয় নাগরিক পঞ্জি( NRC) ও নতুন নাগরিকত্ব আইন( CAA) বিতর্কে গোটা দেশ উত্তপ্ত হলেও ভারত ও বাঙ্গলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করলেন বি.এস.এফ ও বিজিবি -দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি। তবে ভারত থেকে বাঙ্গলাদেশ ঢোকার পরে কিছু মানুষকে সম্প্রতি আটক করেছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা। বিজিবি সূত্রের দাবি এই প্রবণতা আগে দেখা যায়নি। গত চার দিন ধরে দিল্লীতে দুই বৈঠিকে শেষে আজ বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের ডিজি সাফিনুল ইসলাম জানান- ” ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাঙ্গলাদেশে প্রবেশের গত এক বছরে প্রায় ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে না পারলেও এদের দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা গিয়েছে এরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। জীবিকার সন্ধানে বা অন্য কারণে এরা বৈধ কাগজ ছাড়া ভারতে গিয়েছিলেন”। সূত্রের দাবি, ৩০০ জন ধরা পড়লেও কাগজপত্র ছাড়া ভারতে যাওয়া বহু মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে এসেছেন বলে খবর মিলেছে।

অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ও তার পরেই সংসদে সিএএ পাশ হওয়ায় প্রতিবাদ-আন্দোলন শুরু হয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। বিরোধীদের অভিযোগ ওই আইন এনে নিশানা বানানো হচ্ছে মুসলিমদের। রাজ্য বিজেপির দাবি, সরকারের ওই পদক্ষেপ দেখে বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীরা ভারত ছাড়তে শুরু করেছেন। অনেকেই চেষ্টা করছেন পশ্চিমবঙ্গ বা উত্তর-পূর্বের সীমান্ত দিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার। যদিও সীমান্তে সে ধাঁচের কোনও প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়নি বলে আজ দাবি করেন বিজিবি-র ডিজি। পুশব্যাকও হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

সাফিনুল বলেন, ”২০১৯ সালে তিনশোর কাছাকাছি বাংলাদেশি মানুষ ভারত থেকে ফেরার পরে ধরা পড়েছেন। যাদের অধিকাংশই কাজের খোঁজে বা আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে গিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে কোনও বৈধ কাগজ ছিল না।” এনআরসি বা সিএএ-র ফলে সীমান্তে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত সমস্যা বাড়তে পারে কি না, সে বিষয়ে সাফিনুল বলেন, ”এনআরসি ও সিএএ একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধের প্রশ্নে দু’দেশের বাহিনী সমন্বয় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।”

দু’দেশের আলোচনায় উঠে এসেছে অক্টোবরে পদ্মায় ইলিশ ধরতে গিয়ে ভারতীয় মত্‍স্যজীবীর আটক ঘিরে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে হওয়া গোলাগুলির বিষয়টিও। বিএসএফের জওয়ান বিজয়ভান সিংহ এই ঘটনায় মারা যান।গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজিবি-র এক জওয়ানের দিকে। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সীমান্তথাকা সত্ত্বেও গুলিতে এ ভাবে এক জওয়ানের মৃত্যুকে দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা বলেই দাবি করেছেন দুই বাহিনীর প্রধান। সাফিনুল বলেন, ”বিজিবি-র ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে তিনি দোষী প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

সম্পর্কিত খবর