সঙ্কটে সমগ্ৰ বিশ্ব! এখনও এই কারণে ৬৭ কোটি মানুষের বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ, সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে বাড়িতে কিছুক্ষণ কারেন্ট না থাকলেই রীতিমতো জেরবার হয়ে পড়ি আমরা। পাশাপাশি, কারেন্ট আসার জন্য অধীর আগ্রহে চলতে থাকে অপেক্ষা। অন্যদিকে, পৃথিবীতে এখনও ৬৭ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ দিন কাটাচ্ছেন বিদ্যুৎ সংযোগ (Electricity Crisis) ছাড়াই। হ্যাঁ, শুনে অবাক হয়ে গেলেও এবার ঠিক এইরকমই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। মূলত, এই বিপুলসংখ্যক মানুষদের মধ্যে অধিকাংশই আফ্রিকা মহাদেশের বাসিন্দা।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (IEA) একটি রিপোর্টে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। এজেন্সিটি জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি সহ রাষ্ট্রপুঞ্জের রাশিবিভাগ, বিশ্বব্যাঙ্ক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে এই প্রসঙ্গে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালানো হলেও, গোটা বিশ্বকে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আনার কাজ অত্যন্ত শ্লথ গতিতে এগোচ্ছে। এর আগে, রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০১৫ সালে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছিল। তবে, বর্তমান পরিস্থিতির ওপর বিচার করে ২০৩০ সাল পর্যন্তও সেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট গুয়াংঝে চেং বলেন, “বৈদ্যুতিকরণের গতি বর্তমানে শ্লথ হয়ে পড়েছে। বিশ্বের সর্বত্রই প্রায় একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক কালে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদনে যথেষ্ট বৃদ্ধি ঘটলেও তা এহেন বিপুল ঘাটতি মেটানোর পক্ষে তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তরফে ফাতিহ বিরল জানিয়েছেন, “অনেকেই মনে করছেন যে, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্রমশ বেড়েছে। কিন্তু সেটি সস্তায় এবং নিরাপদে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড়সড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে। আর এই কারণের জন্যই বর্তমানে কোটি কোটি মানুষ বিদ্যুৎহীন থেকে গিয়েছেন।”

পাশাপাশি, এটাও জানানো হচ্ছে যে, বর্তমান সময়ে বিদ্যুতের দাম যে হারে বাড়ছে, সেক্ষেত্রে ঋণের জালে জর্জরিত দরিদ্র দেশগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়াটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, সামগ্রিক পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, বলা হচ্ছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর প্রায় ১৯০ কোটি মানুষ রান্নার গ্যাস থেকেও বঞ্চিত থেকে যেতে পারেন।

WhatsApp Image 2023 06 07 at 9.08.06 PM

ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সমগ্ৰ পৃথিবী জুড়ে ক্ষতিকর জ্বালানির প্রভাবে প্ৰতি বছর প্রায় ৩২ লক্ষ প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ সহ নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া অতি অবশ্যই প্ৰয়োজন বলে জানিয়েছেন WHO-র প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। নাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য যে বড় বিপদ ঘনিয়ে আসতে চলেছে সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর