‘আত্মমর্যাদার বিরুদ্ধে আর কাজ করতে পারছি না’, ভরা এজলাসেই পদত্যাগ হাইকোর্টের বিচারপতির

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল বম্বে হাই কোর্ট (Bombay High Court)। ‘ক্ষমা করবেন। আত্মসম্মান খুইয়ে কাজ করতে পারব না।’ ঠিক একথা বলেই ভরা এজলাসে বিচারপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন (Resignation) বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি রোহিত দেও (Justice Rohit B Deo)। শুক্রবার এজলাসে বসেই সমস্ত মামলার শুনানি শেষে উপস্থিত এই ঘোষণা করেন বিচারপতি। উপস্থিত আইনজীবী ও তার সহকারী বিচারপতি এম.ডব্লিউ চান্দওয়ানির সামনেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার আত্মমর্যাদার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করতে পারছি না।”

পাশাপাশি সমস্ত আইনজীবীদের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। বলেন, “যারা যারা এই মুহূর্তে কোর্টে উপস্থিত রয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি আপনাদের ধমক দিয়েছি যাতে কাজের উন্নতি হয়। আপনাদের কারও মনে কষ্ট দিতে চাইনি। আমরা সবাই একটা পরিবারের মতো।”

এরপরেই সকলকে রীতিমতো চমকে দিয়ে বিচারপতি বলেন, “আমি আপনাদের জানাতে চাই যে আমি আমার ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে দিয়েছি। আত্মসম্মান খুইয়ে কাজ করতে পারব না। আপনারা সকলে ভাল করে কাজ করুন।”

পদত্যাগের ঘোষণার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি দেও জানান, কিছু ব্যক্তিগত কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিচারপতি দেও নিজের ইস্তফাপত্র রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠিয়েও দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। এদিন নাগপুরের একটি এজলাসে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।

উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০২২ সালে মাওবাদী যোগে গ্রেফতার হন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক জিএন সাইবাবা। তাকে নিম্ন আদালত আজীবন কারাণ্ডের নির্দেশ দেয়। পরে তাকে বেকসুর খালাস করেন বিচারপতি দেও। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেন বিচারপতি রোহিত দেও। বিচারপতি দেও অভিযুক্তদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশও দিয়েছিলেন। যদিও মহারাষ্ট্র সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেলে শীর্ষ আদালত এই রায়কে খারিজ করে দিয়ে পুনরায় শুনানির জন্য বম্বে হাইকোর্টেরই অন্য আরেকটি বেঞ্চে ফেরত পাঠায়।

justice

গতকাল বিচারপতি দেওয়ের এই আচমকা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য উপস্থিত সবাইকেই বেশ অবাক করেছে। বিচারপতির নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্ত সাড়া ফেলেছে গোটা দেশে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর