বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে (North Bengal Medical College) পোস্ট গ্রাজুয়েশনের (PG) ডাক্তারি পরীক্ষা চলাকালীন হল রুমের এক ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় হলের মধ্যে মোবাইল হাতে ঘুরঘুর করছেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেডিক্য়াল সেলের আহ্বায়ক অভীক দে। চলছে পরীক্ষা, ওদিকে হলের মধ্যে মোবাইল হাতে নিয়ে দেদারে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তৃণমূলের চিকিৎসক সংগঠনের সেই নেতা।
আর সেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হতেই শোরগোল। যদিও ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি বাংলাহান্ট। জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক বর্তমানে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের রেডিওলজি বিভাগের আরএমও। পাশাপাশি তৃণমূলের চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেডিক্যাল সেলের আহ্বায়ক।
এখানেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষা হলে তাকে কেন ঢোকার অনুমতি দেওয়া হল! কীভাবে ঢোকার অনুমতি পেলেন চিকিৎসক নেতা? যদি তিনি পরীক্ষক হন তাহলে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম ভঙ্গ করে কিভাবে তিনি হল রুমে মোবাইল ব্যবহার করছেন। আর যদি পরীক্ষক না হন তাহলে পরীক্ষা হলে ঢুকে তিনি কী করছেন? এই নিয়েই তোলপাড় চিকিৎসক মহলে।
এবার এই ঘটনার ভিত্তিতে পরীক্ষায় বেনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ৭ চিকিৎসক সংগঠন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের চিঠির ভিত্তিতে, অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তলব করলেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Governor CV Ananda Bose)। রাজ্যপাল উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তলব করেছেন।
মেডিক্যাল এডুকেশন স্বাস্থ্যদফতরের অধীনস্থ বিষয় তা সত্ত্বেও রাজভবন তরফে উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়ে পাঠানোয় শুরু হয়েছে আরেক বিতর্ক। ওদিকে, পরীক্ষা হলের সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর মুখ খুলেছিলেন ওই চিকিৎসক নেতা।
চিকিৎসক সেই সময় জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডাক্তারি পোস্ট গ্রাজুয়েশন পরীক্ষার পর্যবেক্ষক করেছে। তাই নিজের কাজ করতেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। তবে নিয়ম ভঙ্গ করে তার হাতে সেই মোবাইল ফোন কি করছিল সেই নিয়ে কার্যত কোনও উত্তরই দিতে পারেননি তিনি।
অন্যদিকে এই ঘটনার জেরে তৃণমূলের চিকিৎসক সংগঠনের অন্তর্দ্বন্দ্বেরও বহিঃপ্রকাশ ঘটে। একদিকে নিজের দিকে ওঠা অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে ফুটেজ ভাইরাল হওয়া নিয়ে দলের চিকিৎসক সংগঠনের নেতৃত্বের একাংশের ওপর আঙ্গুল তোলেন অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক নেতা। অন্যদিকে চিকিৎসকের ভাইরাল হওয়া এহেন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তৃণমূলপন্থী জুনিয়র চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠনের সদস্যরা।