বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে বহুসময়ই চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শোনা যায়। বর্তমানে এই ‘ট্রেন্ড’ টা একটু বেশি। রোগীর কিছু হলেই তার পরিবারের ক্ষোভ এসে পড়ে চিকিৎসকদের ওপর। অনেক ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে। এবার এমনই এক ঘটনার শুনানি হল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। আক্রান্ত চিকিৎসকের (Doctor) জন্য বড় পদক্ষেপ করল আদালত।
ঘটনাটা কী? সম্প্রতি প্যানক্রিয়াসের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক তরুণীর। সদ্য মা হয়েছিলেন তিঁনি। তবে তার মৃত্যুর সমস্ত দায় সেই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞর উপরে চাপাচ্ছে পরিবার, যিনি ওই তরুণীর প্রসবের অপারেশন করেছিলেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চরম হেনস্থা করা হয়েছে ওই চিকিৎসককে, অভিযোগ এমনটাই।
যা জানা যাচ্ছে, সন্তান প্রসবের পর ওই মহিলার প্যানক্রিয়াসের জটিল সমস্যা ধরা পড়ে। বাংলায় বহু চিকিৎসা করার পরও সুস্থ না হওয়ায় দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তবে চিকিৎসায় সাড়া মেলেনি। কিছুদিন পর মৃত্যু হয় ওই মহিলার। আর এই মৃত্যুর সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে পড়ে ওই বহরমপুরের ওই চিকিৎসকের উপর।
আরও পড়ুন: কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার বিরাট বদল! লাগামছাড়া বৃষ্টি, ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে এই ৬ জেলায়
জানা গিয়েছে, ওই মহিলার পরিবার থানায় কোনও অভিযোগ না জানিয়ে উল্টে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হয়েছে। অভিযোগ, চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তার বাড়িতে হামলা চালানো এমনকি তার থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়৷ এরপর বাধ্য হয়েছে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই চিকিৎসক। তবে লাভের লাভ না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
শুক্রবার এই মামলা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে উঠলে সব শুনে তিনি নির্দেশ দেন, যাতে ওই চিকিৎসক নতুন করে কোনও সমস্যায় না পড়েন অবিলম্বে ওই চিকিৎসককে প্রয়োজনীয় পুলিশি সহায়তা প্রধান করতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘রোজই দেখি একই গজল গাইছেন’, ভরা এজলাসে একি বললেন বিচারক! তুঙ্গে শোরগোল
এদিন আদালতে ওই চিকিৎসকের আইনজীবী জানান, মৃতার সন্তান জন্মের সময় তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও অপারেশন করেছিলেন তার মক্কেল। তিনি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। কিন্তু প্যানক্রিয়াসের সমস্যা একেবারেই আলাদা সত্ত্বেও সেই রোগে মৃত্যুর জন্য মহিলার পরিবার চিকিৎসককে লাগাতার হেনস্থা করে চলেছে।
অভিযোগ, চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালানোর পাশাপাশি পূর্বে তার থেকে ৩০ লক্ষ টাকাও দাবি করে মৃতার পরিবার। তা না দিলে বারংবার হুমকি দেওয়া হচ্ছে চিকিৎককে ৷ এমনকি পরিবারের লোকজন রাস্তায় বেরোলে হেনস্থা করা হচ্ছে। সমাজমাধ্যমেও ওই চিকিৎসক সম্পর্কে কুকথা ছড়ানো হচ্ছে।
থানায় পরপর দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরও কোনও সুরাহা না হওয়ায় আদালতে ছোটেন তিনি। সব শুনে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত চিকিৎসককে সুরক্ষা প্রদান করার জন্য পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেন।