রাজনীতি থেকে বহু দূরে থাকা কেষ্টর মেয়ে সুকন্যার কাণ্ড দেখে হতবাক বীরভূমের আমজনতা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বীরভূমের বেতাজ বাদশা তিনি। নিজে অল্প বয়স থেকে রাজনীতি করেছেন। আজ বাংলার শাসকদলের তাঁর একছত্র অধিপত্য। বীরভূমের জেলা সভাপতি তিনি। তাঁর দাপট নিয়ে নানান গল্প রাজনীতির অলিন্দে কান পাতলেই শোনা যায়। সেই অনুব্রত মণ্ডল কিন্তু রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন নিজের একমাত্র কন্যা সুকন্যাকে (Suknya Mandal)। কিন্তু, গরু পাচার মামলার (Cow Smuggling Case) সূত্রে সিবিআই (CBI) পৌঁছে গেল সেই সুকন্যার কাছেই। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকতা নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠে এল কেষ্টর (Anubrata Mandal) মেয়ের নামে।

বাবার সঙ্গে দলের মিটিং, মিছিল কিংবা জনসভায় কোনও দিন দেখা যায়নি সুকন্যাকে। মেয়েকে একরকম অন্তরালেই রাখতেন কেষ্ট। সচেতন ভাবেই মেয়েকে রাজনীতি থেকে দূরে রেখেছিলেন মেয়েকে। মাঝে শুধু করোনা মহামারির সময় বাবার সঙ্গে গরিব-দুঃস্থদের চাল-ডাল বিলি করতে দেখা যায় সুকন্যাকে। বাড়ি থেকে খুব বেশি হলে ২০০-৩০০ মিটার দূরের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান সুকন্য। কিন্তু স্কুলের ধারে কাছেও তাঁকে কেউ কোনও দিন দেখেনি।

Suknya Mandal,Anubrata Mandal,Cow Smuggling Case,CBI,Bangla,Bnegali News

অনুব্রতের এক অনুগামী জানান, জেলা সভাপতির মেয়ে হওয়ার কারণে সুকন্যার একটা প্রভাব বরাবরই রয়েছে। সামনে এসে কথা বলার সাহস কারুর ছিল না। বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নাকি একেবারে বন্ধুর মতো। পাড়ায় তেমন বেরতেন না সুকন্যা। অনুব্রতের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে মেয়ে সুকন্যাই বাবার একমাত্র সঙ্গী হয়ে ওঠেন। বাড়িতে যেটুকু সময় অনুব্রত থাকতেন, বেশির ভাগটাই মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতেন বলে জানা যাচ্ছে। অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর বাড়িতে মঙ্গলযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, সব আয়োজনের দায়িত্ব নিজেই সামলান সুকন্যা।

এই কেষ্ট কন্যা সুকন্যা মণ্ডল পেশায় শিক্ষিকা। অন্যদিকে আবার চালকল-সহ আরও একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর বলেও জানতে পেরেছে সিবিআই। এমনকি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও সুকন্যা ‘ভোলেবোম’ রাইস মিলের কাজে যুক্ত থাকার কথা জানান। তবে ওই অ্যাকাউন্টটি আদৌও সুকন্যার কি না তা জানা যায় নি। এ ছাড়াও তাঁর নামে প্রচুর পরিমাণ সম্পত্তিরও হদিশ পেয়েছে সিবিআইয়। সবার চোখের আড়ালে থাকা এই মেয়ে সম্পর্কে এত কিছু দুর্নীতির খবর জেনে অবাক বোলপুরের নিচুপট্টির বাসিন্দারাও।

Suknya Mandal,Anubrata Mandal,Cow Smuggling Case,CBI,Bangla,Bnegali News

তবে, জানা যাচ্ছে, মেয়েকে নিয়ে একটা আক্ষেপ থেকেছে কেষ্টর। তা হল, বিশ্বভারতীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুকন্যাকে না পড়াতে পারার আক্ষেপ। একবার নিজেই বলেছিলেন, ‘আমার একটা দুঃখ রয়েছে। বিশ্বভারতীতে মেয়েকে ভর্তি করানোর খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু পারিনি।’ তবে বিশ্বভারতীতে না পারলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্যে তাঁর মেয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছেন, তা-ও এক বাক্যে স্বীকার করেছেন অনুব্রত মণ্ডল।

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর