ঝুপড়িতে জন্ম, সংসারের হাল ধরতে নাইট গার্ডের চাকরি, এখন তিনি IIM-র অধ্যাপক

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কেরালার বাসিন্দা রনজিৎ রামচন্দ্রন (Ranjit Ramachandran) আইআইএম (IIM) রাঁচিতে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ২৮ বছর বয়সী এই রামচন্দ্রন অতীতে নাইট গার্ড হিসাবে কাজও করেছিলেন। শনিবার তিনি কেরালায় নিজের বাড়ির একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন। তার ক্যাপশনে লিখেছেন, “আইআইএমের অধ্যাপক এই বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিল”। তারপরই তাঁর এই পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্যুৎ বেগে ভাইরাল হয়ে যায় (Viral)।রঞ্জিত রামচন্দ্রন তাঁর এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ এবং সংগ্রামী যাত্রা অনুসরণ করেছিলেন। এই কারণেই তিনি আজ খুব আলোচনায় রয়েছেন।

   

খবর অনুযায়ী, একটা সময় ছিল যখন রঞ্জিত তাঁর পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য নাইট গার্ডের কাজ করত। তিনি জানান যে তিনি দিনের বেলা কলেজে যেতেন এবং রাতে টেলিফোন এক্সচেঞ্জে নাইট গার্ডের কাজ করতেন। তিনি সেখানে প্রায় ৫ বছর কাজ করেছেন। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, “আমি চেয়েছিলাম যে আমার জীবন সেই যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক যারা সাফল্যের সন্ধানে লড়াই করে।” তিনি এও জানান, একটা সময় ছিল যখন আমি দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করার পর, তা ছেঁড়ে দিয়ে একটি ছোট কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করার কথা ভাবতাম।

IIM

রঞ্জিত এক বছর আগে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেছেন। যাইহোক, এক সময় তিনি এটি ছেড়ে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যখন তিনি আইআইটি মাদ্রাজে যোগ দিয়েছিলেন, তখন তিনি ইংরেজীও বলতে পারতেন না। তবে সেই সময়ে, পরামর্শদাতা অধ্যাপক সুভাষ তাকে অনেক সাহায্য করেছিলেন বলে জানান তিনি। প্রফেসর সুভাষ রঞ্জিতকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি কাজে না লাগানো ভুল হবে। তারপরই রঞ্জিত কেবল আইআইএম-তে অধ্যাপক হওয়ার স্বপ্নই দেখেনি, বরং তা বাস্তবায়নেরও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। রঞ্জিত আইআইটি মাদ্রাজে থাকার সময়, যা অর্থ উপার্জন করতেন তার এক অংশ ভাইবোনদের লেখাপড়ায় জন্য রেখে দিতেন। এরপর তিনি ব্যাঙ্গালোরের ক্রিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসাবেও কর্মরত ছিলেন। আর এখন সেই ঝুপড়ির রনজিৎ আইআইএম রাঁচিতে সহকারী অধ্যাপক।

রণজিৎ রামচন্দ্রনের বাবা রবীন্দ্রন পেশায় একজন টেলর এবং তাঁর মা মনরেগায় একজন শ্রমিক। তিনি তিন ভাইবোনের মধ্যে বড়। তাঁর পুরো পরিবার পলিথিনের ছাঁদ যুক্ত একটি ঝুপড়িতে বসবাস করত। বৃষ্টির দিনে জলের ফোঁটা পড়ত সেই বাড়িতে। রঞ্জিত কেরালার (Kerala) কাসারগোড জেলায় বসবাসরত মারাঠিভাষী পশ্চাৎপদ উপজাতির সম্প্রদায়ের লোক, তবে রণজিৎ বলেছিলেন যে তাঁর ক্যারিয়ারে তাঁর সংরক্ষণের দরকার নেই।

সম্পর্কিত খবর