হিন্দুধর্মের প্রতি ঝোঁক থাকায় তাঁকে বলা হত কাফের,আসলে তিনি খোদার সমান

বাংলাহান্ট ডেস্ক: আবুল পাকির জয়িনুল-আবেদিন আব্দুল কালাম,ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশ রাষ্ট্রপতি। জন্মগ্রহণ করেছিলেন তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে। আব্দুল কালাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন তামিল মুসলমান পরিবারে। তাঁর বাবা জয়িনুল-আবেদিন ছিলেন পেশায় নৌকাচালক। মা আশিয়াম্মা ছিলেন গৃহবধূ। আব্দুল কালাম এর পিতা হিন্দু তীর্থযাত্রীদের নৌকায় পার করাতেন। আব্দুল কালাম যে জায়গায় বাস করতেন সেটি ছিল অপেক্ষাকৃত হিন্দু এলাকা। ছোট থেকে বাবার সাথে নামাজ পড়তে যেতেন। নামাজ পড়ার সময় হয়তো মানেই বুঝতেন না কিছু অনেক কথার, কিন্তু তার বিশ্বাস ছিল তাঁর প্রার্থনা খোদার কাছে গিয়ে অবশ্যই পৌঁছবে। ছোট থেকে দেখতেন রামেশ্বরমের শিব মন্দিরের পুরোহিত এবং তার বাবা ধর্মীয় আলোচনা করছেন। ছোট থেকেই হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের মিল দেখে বড়ো হয়েছেন। বুঝেছেন হিন্দু ধর্ম ও কোরানের আসল অর্থ।

কালাম তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বিজ্ঞানী হিসেবে। পদার্থবিদ্যা নিয়ে সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়েন। এরপর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) তে চল্লিশ বছর বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। কালাম ভারতের মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিলেন। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ বলা হয়।

কালাম ১৯৯৮ সালে ‘পোখরান-২’ পরমাণু পরীক্ষায় প্রধান সংগঠনিক, প্রযুক্তিগত ও রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন। ২০০২ সালে আবদুল কালাম তৎকালীন ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। আবদুল কালাম মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ভারতকে দিয়ে গেছেন অনেক কিছু। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন।

২০১৫ সালে শিলং এর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট এ বক্তব্য রাখার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়।

সম্প্রতি ভারত ডক্টর কালাম এর নামে এক মহাবিনাশক মিসাইল তৈরি করেছেন। আমি মিসাইলের সামনে হাইড্রোজেনও নিষ্ক্রিয়। আবদুল কালামের স্বপ্ন ছিল ভারত একদিন একটা হাইপারসোনিক মিসাইল তৈরি করবেন।

আব্দুল কালামের প্রবল আগ্রহ ছিল হিন্দু ধর্মগ্রন্থের উপর। হিন্দু ধর্মের প্রতি তার এই ঝোঁককে মুসলিম সম্প্রদায় ঠিক চোখে দেখেননি।কাশ্মীরের কট্টরপন্থী মুসলিমরা তাকে মুসলিম হিসেবে মানতে অস্বীকার করতেন। কাফের আখ্যা দিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু সময়ের সাথে বুঝতে পেরেছেন আব্দুল কালাম কাফের নন,উনাকে খোদা বললেও চলে।

সম্পর্কিত খবর