এবার গ্রহাণুতেই বাড়ি হবে মানুষের! নাসার কাছে প্রস্তত শহরের মানচিত্রও, গবেষণায় উঠে এল অবাক করা তথ্য

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাকাশে উপস্থিত দৈত্যাকার পাথর অর্থাৎ গ্রহাণুগুলি সর্বদাই আমাদের কাছে এক গভীর বিষ্ময়ের সৃষ্টি করে। পাশাপাশি, এগুলি পৃথিবীতে বড় বিপদও ঘটাতে পারে। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় “প্রলয়”-এর পেছনে গ্রহাণু বা অ্যাস্টরয়েডেরই (Asteroid) বড় ভূমিকা ছিল। যার ফলে পৃথিবী থেকে ডাইনোসররা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, ভবিষ্যতে যাতে মানুষকে এহেন বিপদের সম্মুখীন হতে না হয়, সেই লক্ষ্যে আমেরিকান স্পেস এজেন্সি ডার্ট (Double Asteroid Redirection Test, DART) মিশনের শুরু করেছে।

মূলত, এটি হল এমন একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা একটি গ্রহাণুর গতিপথ এবং গতিকে প্রভাবিত করতে পারে। শুধু তাই নয়, এবার জানা গিয়েছে গ্রহাণুকে ভয় পাওয়ার পরিবর্তে মানুষ সেখানে বসতি স্থাপনও করতে পারে। পাশাপাশি, মহাবিশ্বের এমন এলাকায় পা রাখতে পারে যেখানে আগে কেউ যায়নি। এটি প্রথমে অবিশ্বাস্য মনে হলেও বর্তমানে এই সংক্রান্ত একটি নতুন গবেষণা এহেন দাবি করেছে। এদিকে, ১৯৭০-এর দশকে নাসা এই শহরের নকশাও তৈরি করেছিল।

এই গবেষণাটি ফ্রন্টিয়ার্স ইন অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড স্পেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই মুহূর্তে এটি একটি লিখিত পরিকল্পনার অংশ মাত্র। পাশাপাশি, গবেষণাপত্রটি দাবি করে যে, বর্তমান বা নিকট ভবিষ্যতে এটি সম্ভব করার জন্য আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি নেই। যদিও, ওই গবেষণায় দাবি করা হয়, একটি গ্রহাণুর উপর শহরের ধারণা সম্পূর্ণরূপে সম্ভব।

স্বপ্ন দেখেছিলেন নাসার পদার্থবিদ: এই প্রকল্পে কাজ করা পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক অ্যাডাম ফ্রাঙ্ক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটা স্পষ্ট যে অদূর ভবিষ্যতে কেউ গ্রহাণুতে শহর স্থাপন করতে যাচ্ছে না। কিন্তু এই ধরণের ইঞ্জিনিয়ারিং সম্ভব করার জন্য যে প্রযুক্তির প্রয়োজন তা পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের পরিপন্থী নয়।” এমনকি নাসাও এটা বিশ্বাস করে। ১৯৭২ সালে, পদার্থবিদ জেরার্ড ও’নিল একটি মহাকাশ বাসস্থানের ডিজাইন করেছিলেন যার মাধ্যমে মানুষ মহাকাশে বাস করতে পারে। এমতাবস্থায়, নতুন গবেষণা সেই নকশাকে কিছুটা পরিবর্তন করে।

images (35)

কার্বন ন্যানোফাইবার রেডিয়েশন থেকে রক্ষা করবে: এই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে Bennu (একটি গ্রহাণু)-র আকারের (প্রায় ৩০০ মিটার) একটি গ্রহাণু ব্যবহার করা যেতে পারে। ওই গ্রহাণুর উপর বসতি স্থাপন করতে, মানুষ এটিতে উপস্থিত উপাদানকেই ব্যবহার করবে। যার ফলে মানুষকে মহাশূন্যে কম জিনিসপত্র বহন করতে হবে। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কার্বন ন্যানোফাইবার দিয়ে তৈরি ব্যাগ বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এগুলির সাহায্যে, গ্রহাণুতে বসবাসকারী মানুষ বিকিরণ এবং মহাজাগতিক তরঙ্গ এড়াতে পারবে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর