৪০ বছর বয়সে এই মহিলা জন্ম দিয়েছেন ৪৪ সন্তানের! বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন স্বামী

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেক মহিলাই তাঁর সন্তানের মা হতে চান। এমনকি, বহুক্ষেত্রে মা হতে না পারার কারণে কেউ কেউ সারাজীবন একটা মানসিক যন্ত্রণাও বয়ে বেড়ান। তবে, বর্তমানে প্রতিবেদনে আজ আমরা এমন এক মহিলার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যাঁর কথা জানার পর কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যাবেন সকলেই। মূলত, মাত্র ৪০ বছর বয়সেই ওই মহিলা এখনও পর্যন্ত ৪৪ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

হ্যাঁ, প্রথমে শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি কিন্তু একদমই সত্যি। শুধু তাই নয়, অবস্থা বেগতিক বুঝে ওই মহিলা যখন জন্মনিয়ন্ত্রণের কথা ভেবেছিলেন, তখন চিকিৎসকরাই তাঁকে এক অবাক করা তথ্য জানান। তাঁরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, ওই মহিলা যদি সন্তান জন্ম দেওয়া বন্ধ করে দেন, তাহলে তিনি মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন এমনকি মারাও যেতে পারেন।

চিনে নিন মরিয়মকে:
Nypost অনুসারে জানা গিয়েছে, ৪৪ জন সন্তানের জন্ম দেওয়া এই মহিলার নাম হল মরিয়ম নাবাতানজি। তিনি পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বাসিন্দা। এখন তাঁর বয়স ৪৩। ইতিমধ্যেই তিনি ৪৪ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, মরিয়ম মাত্র একবার একটি সন্তানের জন্ম দেন। যদিও, তিনি চারবার যমজ, পাঁচবার তিন সন্তানের ও চারবার পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এদিকে, তাঁর ছয় সন্তান মারা গিয়েছে। বর্তমানে জীবিত ৩৮ জনের মধ্যে ২০ জন ছেলে এবং ১৮ জন মেয়ে। যাদের তিনি একা হাতে মানুষ করছেন।

১২ বছর বয়সে বিয়ে:
মরিয়মের বয়স যখন ১২ বছর ছিল তখন তাঁর বাবা-মা তাঁকে বিয়ের অজুহাতে বিক্রি করে দেন। ১৩ বছর বয়সে, তিনি তাঁর প্রথম সন্তানের জন্ম দেন। এদিকে, প্রথম সন্তানের জন্মের পরই, মরিয়ম বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাঁর সন্তান ধারণের ক্ষমতা অন্যান্য মহিলাদের তুলনায় বেশি।

পেছনে রয়েছে এই কারণ:
এই প্রসঙ্গে মরিয়ম যখন চিকিৎসকদের কাছে যান তখন তাঁরা জানান যে, মরিয়মের ডিম্বাশয় অস্বাভাবিক রকমের বড়। যার কারণে তাঁর শরীরে হাইপার-ওভুলেশন (Hyperovulation) নামক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটি হল একটি জেনেটিক অবস্থা। এই অবস্থায় অধিক সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়।

এই প্রসঙ্গে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালার মুলগো হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ চার্লস কিগগুন্ডুর মতে, মরিয়মের ফার্টিলিটি খুব বেশি ছিল। যার কারণে তিনি এতগুলি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ কৌশল মরিয়মের অবস্থায় কাজ করে না এবং তা করা হলেও তিনি গুরুতর রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। যদিও হাইপার-ওভুলেশনের জন্য একটি চিকিৎসা রয়েছে, তবে উগান্ডার গ্রামীণ এলাকায় তা অত্যন্ত কঠিন ছিল।

mariam nabatanzi and twelve children

২০১৬ সালে স্বামী পালিয়ে যান:
জানা গিয়েছে মরিয়মের স্বামী ২০১৬ সালে বাড়ি থেকে সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। এদিকে, ওই বছরই মরিয়ম তাঁর সবচেয়ে ছোট সন্তানের জন্ম দেন। মূলত, উত্তর কাম্পালা থেকে ৩১ মাইল দূরে একটি গ্রামে মরিয়ম তাঁর সন্তানদের নিয়ে থাকেন। মরিয়মের স্বামী তাঁকে ছেড়ে যাওয়ার পর একজন মহিলা মরিয়মকে কিছু সাহায্য করেন। মরিয়ম তাঁর সন্তানদের এখন একাই দেখভাল করছেন। পাশাপাশি, খরচ জোগাতে তাঁকে পরিত্যক্ত জিনিসপত্র সংগ্রহ থেকে শুরু করে ওষুধ বিক্রির মত কাজও করতে হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর