অপহরণ নয় খুন! বেলেঘাটায় শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুনের কথা কবুল মায়ের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেলেঘাটাকাণ্ডে শিশুকন্যার মা-কে টানা জেরা করতেই বেরিয়ে এল আসল সত্য।  কোনও অপহরণ নয়, নিজের সন্তানকে নিজেই খুন করেছে মা, সে কথা পুলিশি জেরায় কবুল করে নিল সন্ধ্যা জৈন ।  ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত  তাকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।

কী ঘটেছিল রবিবার

শহর কলকাতার বেলেঘাটায় ঘর দুপুরে ছোট্ট শিশুকন্যাকে নিয়ে উধাও হয় দুষ্কৃতীরা। বাড়ির কলিং বেল বাজিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, ঘরের মধ্যে থাকা সন্ধ্যা জৈনকে বেধড়ক মারধর করে তাঁর কোলের সন্তানকে কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এক দুষ্কৃতী। পারিবারিক সূত্রে খবর, সেই সময় ছাদে জামাকাপড় মেলতে গিয়েছিলেন ওই বাড়ির আয়া। এদিকে ওই একই সময় আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীও ছিলেন না পাহাড়ায়। বেলেঘাটা থানায় সমস্ত বিষয়টি জানান সন্ধ্যা দেবীর স্বামী। এরপর তদন্ত শুরু হয়।

তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য

শিশুর মা-কে জেরা করতেই তৈরি হয় ধোঁয়াশা। একাধিক অসংগতি লক্ষ্য করা যায় সন্ধ্যার বয়ানে। আশপাশের ২০টি সিসিটিভি দেখেও সন্ধ্যাদেবীর কথা মতো সাড়ে বারোটা থেকে ১টার মধ্যে কোনও সাদা ট্রাউসার পড়া যুবককে ওই আবাসনের মধ্যে দেখা যায়নি। এতেই পুলিসের সন্দেহ আরও বাড়তে থাকে। আরও কড়াভাবে সন্ধ্যা জৈনকে প্রশ্ন করা হয়। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে নিজের সন্তানকে খুনের কথা কবুল করে নেয় সন্ধ্যা জৈন।

খুনের পরিকল্পনা

বহুদিন ধরেই খুনের পরিকল্পনা চলছিল নাকি, প্রথমে ড্রইংরুমের থেকে সেলোটেপ নিয়ে শিশুর গলায় এবং মুখে বেঁধে দেয় সন্ধ্যা। শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে শিশুটিকে। এরপর আবাসনের পিছনে ড্রাই ম্যানহোলে ফেলে আসে শিশুটির দেহ। আয়া তখন ছাদে ছিলেন। শিশুকে ফেলে এসে ড্রইং রুমে  এসে দেওয়ালে নিজের মাথা ঠুকে রক্তাক্ত অবস্থা তৈরি করে সন্ধ্যা।  এরপর ফ্রিজের সামনে শুয়ে পড়েন। শ্বশুর ঢুকলেই অপহরণ এর গল্প ফাদেঁন তিনি।

পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ আবাসনে ছিলেন মাত্র দুজন আবাসিক। টপ ফ্লোরে ছিলেন একজন ক্যান্সার রোগী। আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, এক সপ্তাহ ধরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে সন্ধ্যা জানার চেষ্টা করেছে ২৬ জানুয়ারি কার কী প্ল্যান রয়েছে । সেই অনুযায়ী ঠিক সময়ে কাজ সেরে ফেলে সন্ধ্যা ।

সন্ধ্যা জানিয়েছেন, এই কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ার পর থেকেই একাধিক সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই আক্রোশ থেকেই খুন বলে স্বীকার করেছে সে।  তবে খুনের কারণ এখনই স্পষ্ট হয়নি পুলিশের কাছে । কী কারণে সন্ধ্যা খুন করল তার দু-মাসের কন্যা সন্তানকে, সন্ধ্যার মানসিক কোনও অসুস্থতা রয়েছে কিনা সমস্তটা খতিয়ে দেখা হবে ।

 

 

সম্পর্কিত খবর