১৪ ঘণ্টায় ৫ হাসপাতাল, কাজে এল না স্বাস্থ্যসাথী কার্ড! চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু বৃদ্ধর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : সমস্ত নিয়ম মেনেই বানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। কিন্তু চরম দরকারে কোনও কাজেই এলো না তা। ১৪ ঘন্টা ধরে ৫ টি হাসপাতালে ঘোরার পরও মিলল না পরিষেবা। পথ দুর্ঘটনার পর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল বৃদ্ধের। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের জব্বরপল্লিতে।

জানা যাচ্ছে দুর্গাপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের জব্বরপল্লী বাসিন্দা ছিলেন ৬২ বছরের নির্মল মণ্ডল। শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ নিজের ঘড়ির দোকান বন্ধ করে সাইকেলে চেপেই বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় একটি বাইক এসে সজোরে ধাক্কা মারে তাঁকে। সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান নির্মলবাবু। আর এরপরই শুরু হয় আসল হয়রানি।

প্রথমে তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর সাব ডিভিশন হাসপাতালে। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন আঘাত অত্যন্ত মারাত্মক হওয়ায় ওই হাসপাতালে সেই চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। ওই অবস্থাতেই নির্মলবাবুকে এরপর নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা পাওয়ার বদলে মেলে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ। তবে ওই পরিস্থিতিতে কলকাতা যেতে রাজি হননি ওই ব্যক্তির পরিবারের লোকজন।

মৃতের ছেলে রণজয় মণ্ডল জানিয়েছেন, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে রক্তাক্ত অবস্থাতেই বাবাকে বর্ধমানেই অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। ফিরতে হয় সেখান থেকেও। এরপর দুর্গাপুরে ফিরে আসার পথে কাঁকসায় দুটি হাসপাতালেও আহত নির্মল বাবুকে ভর্তির চেষ্টা করেন তাঁরা। দেখানো হয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও। কিন্তু সেখানে বেড নেই বলে জানিয়ে দেয় হাসপাতাল। ফলে কার্যতই বিনা চিকিৎসায় ভোর ৩টে নাগাদ রাস্তাতেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন বৃদ্ধ।

swasthasathi Card,Road Accident,death,Durgapur road accident,স্বাস্থ্যসাথী কার্ড,পথ দুর্ঘটনা,মৃত্যু,দুর্গাপুর

ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। বৃদ্ধের মৃত্যুর পর দুর্ঘটনাস্থলে রাস্তা অবরোধ করেন পরিবারের সদস্যরা। মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখেই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ঘন্টা চারেক ধরে চলে অবরোধ। খবর পাওয়ার পরও ঘটনাস্থলে আসতে বিস্তর সময় লাগে পুলিশের। কারণ ঘটনাস্থলটি কোন এলাকার মধ্যে পড়ে তা নিয়ে দুই থানা দুর্গাপুর এবং লাউদোহার মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ‘স্বাস্থ্যসাথী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প। এই কার্ড যারা ফিরিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা অন্যায় করেছেন। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানাব।’ ন্যায় বিচারের আশ্বাস পেয়ে অবশেষে বেলা সাড়ে আটটা নাগাদ ওঠে অবরোধ।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর