নেতাজির সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে বহুবার! এখন ভাঙা মাটির ঘরেই দিন গুজরান করছেন স্বাধীনতা সংগ্রামী

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সমগ্ৰ দেশজুড়েই আজ প্রবল উৎসাহের সাথে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস (Independence Day)। এমনকি, এই দিনটিকে সার্বিকভাবে স্মরণীয় করে তুলতে বছরভর “আজাদী কা অমৃত মহোৎসব”-এর মাধ্যমে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়। পাশাপাশি, শুরু করা হয় “Har Ghar Tiranga” নামক কর্মসূচিও। আর এগুলির মাধ্যমেই দেশের প্রতিটি প্রান্তে আজ তেরঙ্গার উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও একাধিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে এই দিন।

তবে এত আনন্দ-আয়োজনের মাঝেই যেন খুঁজে পাওয়া গেল “চরম বাস্তব”-কে। যে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হাত ধরে স্বাধীন হয়েছিল দেশ, আজ তাঁরাই যেন “ব্রাত্য” হয়ে রয়েছেন। আর এই ঘটনাই প্রমাণ করে দেয় যে, “প্রদীপের নিচেই রয়েছে অন্ধকার।” গোঘাটের বাসিন্দা রাধাকৃষ্ণ কর্মকার, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ পালন করেছিলেন তিনি। কিন্তু, আজ ৯৬ বছর বয়সে পৌঁছেও তিনি তাঁর যোগ্য সম্মানটুকু পাননি।

জানা গিয়েছে ১৯২৭ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসিত হুগলির আরামবাগের গোঘাটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাধাকৃষ্ণ কর্মকার। একদম ছোটবেলাতেই মাকে হারিয়েছিলেন তিনি। এমতাবস্থায়, মা ও দিদির কাছে বড় হয়ে ওঠেন রাধাকৃষ্ণ। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মধ্যে ছিল গভীর দেশপ্রেম। পাশাপাশি, কিশোর বয়সেই রাধাকৃষ্ণ জড়িয়ে পড়েন রাজনীতির সঙ্গে। যদিও, তাঁর কাছে রাজনীতির অর্থ ছিল প্রত্যক্ষভাবে মানুষের সেবা করা। আর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন তিনি।

শুধু তাই নয়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর একনিষ্ঠ ভক্ত হলেন রাধাকৃষ্ণ বাবু। গোঘাটে খুব কাছ থেকে নেতাজিকে দেখার পাশাপাশি তাঁর ভাষণ শুনতে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর মেদিনীপুরেও। এমতাবস্থায়, নেতাজি যখন কংগ্রেস ভেঙে ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরি করেন তখন তিনিও ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগদান করেছিলেন। এমতাবস্থায়, প্রবীণ এই স্বাধীনতা সংগ্রামী জানান, “সেদিনকার রাজনীতি ও আজকের রাজনীতির মধ্যে বহু তফাৎ রয়েছে। তাই এখনকার রাজনীতির প্রতি আর তেমন কোনো টান নেই।”

WhatsApp Image 2022 08 15 at 6.20.34 PM

একটা সময়ে ব্রিটিশ মদতপুষ্ট জমিদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন তিনি। এমনকি, চলেছে লড়াইও। আজীবন মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন রাধাকৃষ্ণ বাবু। কিন্তু, আজ তিনি সকলের আড়ালে থেকে গিয়েছেন। তবুও, স্বাধীনতা দিবস এলেই পুরোনো সেই স্বর্ণালী স্মৃতি ভিড় করে আসে মনে। আর সেই স্মৃতিকে সম্বল করেই ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে বসে অত্যন্ত ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি নিয়েই কোনোমতে দিন গুজরান করছেন এই বর্ষীয়ান স্বাধীনতা সংগ্রামী।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর