আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত! ৪ মাস পর কেমন আছেন ‘ধর্ষক’ সঞ্জয়? জেলে কী কাজ করছেন?

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) পর থেকে তাঁকে মোটামুটি গোটা রাজ্য চেনে। নৃশংস এই ধর্ষণ খুনের ঘটনায় গত ২০ জানুয়ারি সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy) সাজা ঘোষণা করেছে শিয়ালদহ আদালত (Sealdah Court)। আজীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের এই প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে। একদা যিনি ‘পুলিশ’ লেখা বাইক নিয়ে শহরময় ঘুরতেন, বর্তমানে তাঁর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। সেখানে কেমন আছেন সঞ্জয়? সাজা ঘোষণার ৪ মাস পর কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন তিনি? একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে সেই তথ্যই তুলে ধরা হল।

জেলের বাগানে কাজ করছেন আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) সঞ্জয়

আরজি কর কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার আগে অবধি ‘খোলা পাখি’র মতো উড়ে বেড়াতেন সঞ্জয়। পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার হলেও তাঁর দাপট ছিল দেখার মতো। আরজি কর সহ শহরের নানান সরকারি হাসপাতালে তাঁর যাতায়াত ছিল অবাধ। নিয়মিত বক্সিং করতেন। অধিকাংশ সময় কাটত কলকাতা পুলিশের ৪ নং ব্যাটেলিয়নের বি ১৪ কে ব্যারাকে। এখন সেই জীবনযাত্রায় আমূল বদল এসেছে। জেলের চার দেওয়ালের মধ্যেই দিনযাপন করছেন আরজি কর দোষী।

প্রেসিডেন্সি জেল (Presidency Jail) সূত্রে খবর, আজীবন কারাবাসের সাজা পাওয়ার পর জেলের মধ্যে প্রায়ই মনমরা হয়ে থাকতেন সঞ্জয়। কারোর সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলতেন না। খুব একটা কাজ করতেন না। তবে বিগত চার মাসে সেই পরিস্থিতি বদলেছে। আস্তে আস্তে যেন ‘খুলতে’ শুরু করেছেন আরজি কর দোষী। আগের মতো চুপ থাকেন না। টুকটাক কথাবার্তা বলেন। সকাল-সন্ধ্যা বাগানে যান।

আরও পড়ুনঃ ‘চা-মোমোর দোকান কখনও ফাঁকা দেখেছেন?’ উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে কর্মসংস্থান নিয়ে বড় পরামর্শ মমতার

বর্তমানে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের ৬ নং সেলে রয়েছেন সঞ্জয়। বাগান পরিচর্যার কাজ করেন তিনি। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় সেখানেই কাটে তাঁর। আরজি কর (RG Kar Case) দোষীর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন কয়েদি এই কাজ করেন। বর্তমানে তিনি ‘আনস্কিলড’ পর্যায়ে রয়েছেন। দৈনিক মজুরি ৮০ টাকা।

জেলের নিয়ম অনুসারে কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে কয়েদিদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়, আনস্কিলড, সেমি স্কিলড ও স্কিলড। ভাগ ভেদে মজুরিও আলাদা। আনস্কিলডের ক্ষেত্রে রোজ ৮০ টাকা, সেমি স্কিলড ৯০ টাকা ও স্কিলড বিভাগের কয়েদিরা দৈনিক ১০০ টাকা করে মজুরি পান। আগামীদিনে সঞ্জয়ের ‘কর্মদক্ষতা’র দিকে নজর রেখে তাঁকে অন্য কাজে নিয়োগ করা হতে পারে বলে খবর।

Shiv Sena leaders might fight for RG Kar case Sanjay Roy in Calcutta High Court

জানা যাচ্ছে, যে সকল কয়েদি লম্বা সময়ের জন্য সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তাঁদের এই কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ওই কয়েদিকে প্রথম তিন মাসে পর্যবেক্ষণ করে জেল কর্তৃপক্ষ। এরপর তাঁকে কাজ দেওয়া হয়। বর্তমানে বাগান পরিচর্যার পাশাপাশি নিজের সেল পরিষ্কার রাখার কাজও করেন আরজি কর (RG Kar Hospital) দোষী। কাজের ধরণ, সংশ্লিষ্ট কয়েদির আচরণের দিকে নজর রেখে সাজার মেয়াদ মাস প্রতি সর্বাধিক ৪ দিন অবধি হ্রাস পেতে পারে বলে খবর।

RG Kar case Sanjay Roy explosive claims against Kolkata Police

বর্তমানে বাগান পরিচর্যার কাজ করে দৈনিক ৮০ টাকা করে মজুরি পাচ্ছেন সঞ্জয়। সেটা তাঁর নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। নিয়ম অনুযায়ী, সম্পূর্ণ রোজগারের ৫০% অর্থ জেলবন্দি থাকাকালীন নিজের নানান প্রয়োজনে খরচ করতে পারেন কয়েদিরা। বাকি অর্থ দরকার পরলে অনুমতি সাপেক্ষে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় কিংবা কারাবাসের মেয়াদ শেষে গোটা টাকা ওই কয়েদিকে দিয়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, আরজি কর ধর্ষণ খুন কাণ্ডে (RG Kar Case) এখনও অবধি শুধুমাত্র সঞ্জয়কেই দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদহ আদালত। সাজা ঘোষণার পর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। এখনও এই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। আগামীদিকে কী সামনে আসে সেটাই দেখার।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।