২০০৪ এ প্রথমবার ধর্ষককে কুপিয়ে মারা হয়েছিল আদালতেই, কেটে নেওয়া হয়েছিল পুরুষাঙ্গ

বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত সপ্তাহের বুধবার হায়দরাবাদের তরুণী পশু চিকিত্সক প্রিয়াঙ্কার রেড্ডির গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। নিন্দার ঝড় এবং লাগাতার প্রতিবাদ আন্দোলন মিছিল বিক্ষোভ মিছিল এসব চলছে। সোশ্যাল মিডিয়া সরব হয়েছে প্রিয়াঙ্কা রেড্ডি গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার যুবকের কড়া শাস্তির দাবিতে। সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করেছেন, কেউ ফাঁসির দাবি আবার কেউ জীবন্ত থেকে পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার দাবি, আবার কেউ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। কেউ আবার জনতার হাতে ছেড়ে দিয়ে তাদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার দাবি জানিয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ কার্যত মনে করিয়ে দিচ্ছে 2004 সালের একটি ঘটনাকে। যেখানে আদালতে সকলের সামনে ধর্ষণে অভিযুক্তকে পিটিয়ে তাঁর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়েছিলেন দুশ জন মহিলা। এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল,আর সেই স্মৃতি কার্যত ফিরে আসছে হায়দরাবাদের ঘটনার পর। নাগপুরের কস্তুরবাই এলাকার আক্কু যাদব, যাঁকে ভরা আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করা হয়েছিল।

   

ওই এলাকার ত্রাস ছিলেন আক্কু যাদব, এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর ছেলে হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল। তাই তো সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে প্রথম একবার ধর্ষণ করে পার পেয়ে যায়। এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার পর যে হেতু বিষয়টি চাপা পড়ে যায় তার পর ধর্ষণ করা যেন তাঁর নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। বিশেষ করে ওই এলাকার বস্তিগুলির মহিলারা নিয়মিত আক্কু যাদবের ধর্ষণের শিকার হতেন।

বার বার মামলা দায়ের করেও লাভ হত না, উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে এক দশক ধরে এ ভাবেই ধর্ষণ এবং গণধর্ষণে অভিযুক্ত আর যাদব এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াত। কাউ কে প্রেমিকা কিংবা গণধর্ষণের প্রমাণ নেই বলে প্রত্যেকে বাড় পার পেয়ে যেত তবে, এ সময় বিষয়টি নজরে আসে উমা নারায়নে নামে এক মহিলার। যিনি সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

একদিন কস্তুরি বাই এলাকার বস্তিতে কাজ করতে এসে আক্কু যাদবের কথা জানতে পারেন এর পর ওই বস্তির মহিলাদের মধ্যে প্রতিশোধের স্পৃহা জাগিয়ে তুলতেন তিনি। আর এভাবেই বস্তির মহিলারা তাঁর বাড়িতে হামলা করবে বলে উঠে পড়ে লাগে। বিপদ বুঝে আগে থেকেই বাড়ি থেকে পালিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে আক্কু যাদব।

2004 সালের 13 আগস্ট তারিখেই তাঁর মামলার শুনানি শুরু হয়। ব্যাস শুনানি চলাকালীন দু জন মহিলা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর দিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে নেয়, এর পর সকলেই অভিযুক্ত বলে গ্রেফতার করার দাবি তোলে। কিন্তু খুনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে সমাজ কর্মী উমা নিজেকে দোষী বলে দাবি করে এবং তার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

8 বছর পর তিনি জেল থেকে ছাড়া পান, আরও একুশ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল যদিও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।আর হায়দরাবাদ গণধর্ষণ কাণ্ডের এই ঘটনা সেই আক্কু যাদবের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর