স্যামসনের মরিয়া প্রয়াস সত্ত্বেও ৯ রানের ব্যবধানে হার ভারতের

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: বৃথা গেল সঞ্জু স্যামসন, শ্রেয়স আইয়ারদের লড়াই। <span;>লড়াই করেও টপ অর্ডারের চূড়ান্ত ব্যর্থতা ঢাকতে পারলেন না এই দুই তারকা। ফলস্বরূপ একসময় বড় ব্যবধানে হাঁটতে হবে মনে হওয়া ম্যাচের শেষ পর্যন্ত মাত্র ৯ রানে হারলো ভারতীয় দল। <span;>সেই সঙ্গে এই ম্যাচ স্পষ্ট করে দিল যে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অনেক ভারতীয় ক্রিকেটের এই মুহূর্তে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার যোগ্য নন।

   

শিখর ধাওয়ানের নেতৃত্বে আজ লখনউয়ের ‘ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে’ ওডিআই সিরিজের প্রথম তেম্বা বাভূমার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। বৃষ্টির জন্য ম্যাচ শুরু হতে বেশ কিছুটা দেরি হয়েছিল। যার ফলে ম্যাচের প্রতি ইনিংস থেকে ১০ ওভার করে কমিয়ে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে ১০০-র বদলে ৮০ ওভারের।

রোহিত, বিরাট, রাহুল, পন্থ, ভুবনেশ্বর, চাহালদের মতো তারকা ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে আজ বেশ কিছু তরুণ ক্রিকেটারকে মাঠে নামতে দেখা গেছে। আজ ওডিআই ফরম্যাটে অভিষেক ঘটেছিল রুতুরাজ গায়কোয়াড এবং রবি বিশ্নইয়ের। বাকি যারা দলে আছেন তাদের প্রত্যেককেই কম-বেশি ভারতীয় দলের হয়ে খেলতে দেখা গেছে কিন্তু তারা প্রত্যেকে একসঙ্গে আগে কোনও শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে এই ফরম্যাটে মাঠে নামেননি। তারই মধ্যে আজ টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক ধাওয়ান।

প্রথম উইকেটে জানেমান মালান এবং কুইন্টন ডি ককের মধ্যে একটি ভালো পার্টনারশিপ হয়। ১৩ তম ওভারের প্রথম বলে দলগত ৪৯ রানের মাথায় সেই পার্টনারশিপ ভাঙ্গেন শার্দুল ঠাকুর। নতুন বল হাতে আবেশ খান এবং মহম্মদ সিরাজ রান আটকে রাখলেও কোনও সাফল্য পাননি। এরপর ২২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তেম্বা বাভূমার অফফর্ম অব্যাহত এবং সেইসঙ্গে আজ হতাশ করেছিলেন এইডেন মার্করমও।

১১০-এর দলগত স্কোরের মাথায় যখন কুইন্টন ডি কক (৪৮) ফিরে যান তখন সকলেই আশঙ্কা করেছিলেন যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কম রানে আটকানো যাবে। কিন্তু অন্যরকম কিছু মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ছিলেন ডেভিড মিলার এবং হেনরিক ক্লাসেন। আজ ডেবিউ করা রবি বিশ্নইয়ের ওপর আক্রমণ করেন মিলার। ডি ককের উইকেট নিলেও আজ বেশকিছু রান বিলিয়েছেন এই তরুণ লেগস্পিনার। ডেথ ওভারে ভারতের সমস্যা ওডিআই ফরম্যাটেও প্রকট। ৩০ থেকে ৪০ তম ওভারের মধ্যে ৮৫ রান তুললো দক্ষিণ আফ্রিকা। কোনও উইকেটও পড়লো না ওই সময়ে। মিলারের ৬৩ বলে ৭৫ ও ক্লাসেনের ৬৫ বলে ৭৪ রানের দৌলতে ৪০ ওভারে ভারতকে ২৫০ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে প্রোটিয়া শিবির। ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বোলিং করে ৮ ওভারে মাত্র ৩৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন শার্দূল। অসাধারণ একটি ডেলিভারিতে মার্করমের উইকেট পেয়েছেন কুলদীপ যাদবও।

এরপর রান তাড়া করতে নেমে রাবাডা পার্নেলদের সামনে চূড়ান্ত বেকায়দায় পড়ে ভারত। তৃতীয় ও ষষ্ঠ ওভারে মাত্র ৮ ওঠার পর দুই ফর্মে থাকা ওপেনার শুভমান গিল এবং শিখর ধাওয়ান আউট হয়ে ফিরে যান। দীর্ঘক্ষণ ক্রিজে থেকেও বড় রান করতে ব্যর্থ হন রুতুরাজ গায়কোয়াড (১৯)। একইরকমভাবে ব্যর্থ হন ঈশান কিশান (২০)। ৫১ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন শ্রেয়াস আইয়ার এবং সঞ্জু স্যামসন। সঞ্জু ৩৭ বলে ৫০ করে আউট হওয়ার পর সঞ্জুর সাথে মিলে আক্রমণ বজায় রাখেন শার্দুল ঠাকুর (৩৩)। শার্দুল আউট হওয়ার পরে একার হাতে এক অসম্ভবকে সম্ভব করার লড়াই লড়ছিলেন সঞ্জু। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩০ রানের। প্রথম তিন বলে ১৫ রান তুলে ফেলেন সঞ্জু। শেষ ওভারে একজন স্পিনার থাকায় তার আর অসুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত সামসীর শেষ তিন বলে ৫ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ৬৩ বলে ৮৬ রানের অভাবনীয় ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে যান তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিডি। তবে ৮ ওভারে ২ টি মেডেন সহ মাত্র ৩৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ের আসল নায়ক রাবাডা।

Avatar
Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর