উত্তরবঙ্গের জমি দখল করছে বাংলাদেশিরা, করোনা মিটলেই আলাদা রাজ্যের দাবি জানাব! বিস্ফোরক জন বারলা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গোরখা জনমুক্তি মোর্চার পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে এর আগেও সাথ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা পার্টি। যদিও কামতাপুরিদের জন্য আলাদা রাজ্যের বিষয়টি এখন অনেকটা চাপা পড়ে গিয়েছে কিন্তু এরই মধ্যে গোটা উত্তরবঙ্গকেই আলাদাভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রসঙ্গ ফের একবার উত্থাপন করলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা।

এ প্রসঙ্গে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। তার দাবি দক্ষিণবঙ্গ চিরকাল উত্তরবঙ্গকে প্রতারণা করে এসেছে। আর সেই কারণেই আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্য হওয়া একান্ত দরকার। যদিও তার এই মতামতকে সমর্থন করেননি বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুও। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন বিজেপি কি কোথাও বলেছে ভোটে জিতলে আলাদা রাজ্য করে দেবে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জন বারলার এই মন্তব্য সমর্থন করলে বঙ্গভঙ্গের যে অভিযোগ সর্বদা অন্য দলগুলো বিজেপির বিরুদ্ধে আনে তাতেই কিছুটা শিলমোহর পড়ে যায়। আর সেই কারণেই পিছিয়ে গিয়েছেন সায়ন্তন বসুর মত নেতারা।

এ নিয়ে এর আগেও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, “নতুন করে আর বঙ্গভঙ্গ হতে দেওয়া হবে না। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মানে কি? জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ির জমি বিক্রি করে দেবে। মুখে চীনের বিরোধিতা করে চীনের হাতই শক্ত করবে।” কিন্তু এত বিরোধিতা সত্ত্বেও নিজের মতামতে অনড় আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা। আজও এক সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে এ প্রসঙ্গে একই বক্তব্য পেশ করেন তিনি। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন করোনাকাল কিছুটা মিটলেই এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দরবার করবেন তিনি। তার মতে এ বিষয়ে সাথে রয়েছে উত্তরবঙ্গের মানুষও।

সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, “এখানে কেন্দ্রের পাঠানো উন্নয়নের টাকা কোথায় যাচ্ছে? উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত কেন? অসম সীমানা থেকে নেপাল সীমানা পর্যন্ত জাতীয় সড়কের ধারে ধারে এলাকা দখল করছে বাংলাদেশি রোহিঙ্গারা। ওদের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড হয়ে যাচ্ছে। মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অথচ এখানকার মানুষ রেশন পাচ্ছেন না।” জন বারলা যে তার দাবিতে অনড় এদিন আরও একবার সে কথাই স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন তিনি। এমনকি রাজ্য বিজেপিও যখন সেভাবে তার মন্তব্যে সাথ দিতে রাজি নয় তখনও তার নিজের অবস্থান ছাড়তে নারাজ বারলা।

বরং রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, এখানে আইনের শাসন নেই। বিধানসভা ভোটের পর হাজার হাজার বিজেপির কর্মী এখনো ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন। তাদের ঘরে ফিরতে গেলে মোটা জরিমানা দিতে হচ্ছে। তাই এখানকার লাঞ্ছিত মানুষের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করব। তার এই মন্তব্যের অবশ্য তীব্র বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী। তার পরিষ্কার মত, দু’বছর ধরে সাংসদ কি কাজ করেছেন তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। বঙ্গভঙ্গের জঘন্য রাজনীতি বাংলার উত্তরবঙ্গের মানুষ মেনে নেবে না।

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর