কারগিল যুদ্ধের নায়ক জোশী পৌঁছালেন লাদাখে, সুখোই মিরাজের সাথে মোতায়েন সেনার আরও দুটি দল

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ৬ দিন পেরিয়ে গেল, চিনের (china) সঙ্গে ভারতের (india) স্ট্যান্ড অফের। তার মধ্যেই ধীরে ধীরে সীমান্তে শক্তি বাড়াচ্ছে ভারতীয় সেনা। দেখা যাচ্ছে, প্রায় প্রতিদিন গালওয়ান উপত্যকায় কাশ্মীর থেকে লাদাখে আসছেন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। একজন উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‌বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই কাশ্মীর থেকে সেনা জওয়ানদের সরিয়ে লাদাখের চিন সীমান্তে নিয়ে আসা হচ্ছে।’‌ বর্তমান পরিস্থিতি বলতে তিনি যে চিন আর ভারতের সাম্প্রতিকতম দ্বন্দ্বের কথা বলছেন, সেটা স্পষ্ট। তিনি জানিয়েছেন, স্পষ্ট করে সংখ্যাটা সরকারি হিসাবে না বললেও সেনা নিজের মতো করে তাঁর রসদ মজুত করার কাজ শুরু করে দিয়েছে। আর এতে কাশ্মীরের শান্তি রক্ষায় কোনও অসুবিধাই হবে না বলে মনে করছেন তিনি। চিনের পিপল্‌স লিবারেশন আর্মির ওপর চাপ তৈরি করতেই ভারতীয় সেনা এই পদক্ষেপ করছে বলে সূত্রের খবর। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) উপর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার উত্তর সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াইকে জোশী লাদাখ পৌঁছেছেন।

ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) সুখোই এবং মেরাজের সাথে লাদাখের বিমানও বাড়িয়েছে। চিনা সেনার জমায়েত বাড়ার সাথে সাথে ভারতকেও এগিয়ে আসতে হবে এবং সবকিছু ঠিক করতে হবে। এখন আমাদের সেনাবাহিনীও সীমান্তে পর্যাপ্ত সংখ্যায় রয়েছে। তবে এখনও আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা চলছে। সামরিক স্তরের পাশাপাশি সেনাবাহিনী পর্যায়ে উভয়ই প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের মাধ্যমে আলোচনা চলছে।

সূত্রে জানা গিয়েছে, গালভান এবং বাডা হট স্প্রিং অঞ্চল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মূল সমস্যা প্যাংগং লেকের আশেপাশের। পাঙ্গং হ্রদের উত্তর তীরের ১৩৪ কিলোমিটার অংশটি খেজুরের মতো বেরিয়ে আসে এবং বিভিন্ন প্রোট্রুশনকে “আঙ্গুল” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। চীনা আঙুল ৩ এবং ৪ এর মধ্যে বিতর্কিত অঞ্চল হিসাবে।

উল্লেখ্য,দারবুক নামে একটি গ্রাম, ভারত চিন সীমান্তের কাছেই। সেই গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিদিন রাতে ৮০–৯০ টি ট্রাক এই এলাকা দিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে সেনা কনভয় রয়েছে, এছাড়া এমনি গাড়ি যার কোনওটাতে রয়েছে সেনা জওয়ানরা, কোনওটাতে রয়েছে অস্ত্র ও অন্য রসদ। লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএল নরসিমা জানিয়েছে, ‘‌এদের মধ্যে কয়েকটি গাড়ি হয়ত যাচ্ছে শীতের রসদ মজুত করার জন্য। সাধারণত, শীতে যে রাস্তা বন্ধ থাকে, গরমে বরফ গলে গেলে সে রাস্তা খুলে যায়, তাই সেখান দিয়ে প্রতিবছর শীতের রসদ আগে থেকে মজুত করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বছরের এই সময়টাতেই এই কাজ করা হয়। সেটাই হচ্ছে এখন।’‌

এই সপ্তাহেই ভারতীয় সেনা আবারও চিনা বাহিনীর সঙ্গে শান্তি আলোচনার একটি চেষ্টা করেছে। মে মাসের ২২–২৩ তারিখে মেজর জেনারেল স্তরের একটি শান্তি বৈঠক পরিকল্পনা করা হলেও তাতে শেষ পর্যন্ত লাভ হয়নি। ওদিকে খবর পাওয়া যাচ্ছে, চিনা সেনা টাইপ ১৫ ট্যাঙ্ক, Z-20 হেলিকপ্টার, GJ-2 ড্রোন সীমান্তে মজুত করে রেখেছে। তাঁরাও একইভাবে ভারতীয় সেনার ওপর চাপ তৈরি করতে সীমান্তে শক্তিবৃদ্ধি করেছে।

সম্পর্কিত খবর