মহালয়া মানেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, এই শুভ লগ্নে জেনে নিন উত্তম কুমারের মহালয়ার কাহিনী

বাংলাহ্নট ডেস্কঃ ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে…!’ দূর্গাপুজোর প্রায় ১ সপ্তাহ আগে প্রতি বছর সকালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র (Birendra Krishna Bhadra) মহাশয়ের গলায় মহালয়া (Mahalaya) শোনার রেওয়াজ আজও রয়েছে। সেই কণ্ঠস্বরে মায়ের আগমনের বার্তা বহন করে নিয়ে আসে।

মহালয়ার দিন সকালে রেডিতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সে এক অন্যমাত্রাই পেয়েছে। সর্বকালের অন্যতম সেরা রূপকার তিনি। মহালয়ার প্রাক্কালে তাই আমরা ফিরে যাব সেই পুরনো দিনের বেশ কিছু স্মৃতি মন্থনে।

শোনা গিয়েছে, যতদিন মহালয়ার দিন সকালে রেডিও অফিস থেকে মহালয়া সরাসরি সম্প্রচারিত হত, ততদিন তাঁর বাড়িতে রাত দুটোর সময় রেডিও অফিস থেকে গাড়ি আসত। তারপর সেই গাড়িতে চেপে তিনি রেডিও অফিসে গিয়ে সরাসরি মহালয়ার সকালে মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ করতেন। তবে পরবর্তীতে যখন রেকর্ডিং প্রচার করা হত, তখন তিনি কিন্তু সেই সময়টায় রেডিও অফিসেই থাকতেন।

আমরা সাধারণত মহালয়ার দিন সকালে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলাতেই মহালয়া শুনে এসেছি। তাঁর কণ্ঠেই মহালয়া সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং সর্বজন গ্রাহ্য। তবে ১৯৭৬ সালে কিন্তু মহিষাসুরমর্দিনী প্রচারত হয়নি, সম্প্রচারিত হয়েছিল ‘দুর্গা দুর্গতিহারিণী’। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের বদলে এই মহালয়া শোনা গিয়েছিল মহানায়ক উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) কণ্ঠে।

সূত্রের খবর,  সেবার ওই অনুষ্ঠানের এক রাতে আগে উত্তম কুমার নাকি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের  বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁর হাত ধরে উত্তম কুমার সেদিন বলেছিলেন, তিনি ওই অনুষ্ঠানটি নিজে থেকে করতে চাননি।

তখন উত্তম কুমারকে কোনরকম নিরুৎসাহ না করে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি কেন করবেন না? অবশ্যই করুন এই কাজটা। সবসময়ই নতুন কিছু করা দরকার। চিন্তা করবেন না, আপনার পাশে আমি আছি।’

সেবার মহালয়ার ভোরে নিজে ঘরের খাটে বসে অনুষ্ঠানটি শুনেছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। উত্তম কুমারের ‘দুর্গা দুর্গতিহারিণী’ শুনে মনে মনে বলেছিলেন ভালোই তো করেছে। কিন্তু জনগণ মানতে পারল এই নতুন কণ্ঠ। উত্তম কুমার মহানায়ক হলেও, তাঁর গলায় মহালয়া পছন্দ হল না জনগণের। তাই সেবার, জন সাধারণের চাপে পড়ে ষষ্ঠীর সকালে সম্প্রচারিত হয়েছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় মহিষাসুরমর্দিনী।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর