চাঞ্চল্যকর ঘটনা বাংলায়! অভাবের চোটে ভিন্ন রাজ্যে গিয়ে কিডনি বিক্রি করছেন বহু মানুষ

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ লকডাউনে কাজ হারিয়ে অর্থ কষ্টে ভুগছে উত্তরদিনাজপুর (Uttar Dinajpur) জেলার বিন্দোল গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার মানুষেরা। তাই বেছে নিতে হল কিডিনি (Kidney) বিক্রির পথ। সেই টাকা দিয়ে অন্তত পরিবারের মুখে হাসি ফেরানো যাবে। নিজের শরীরের কথা চিন্তা না করে তাই ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে এই এলাকার মানুষজন।

   

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, করোনা আবহে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। সরকারী তরফ থেকেও মেলেনি কোন সাহায্য। তাই এই এলাকার মানুষেরা কিডিনি বিক্রির পথ বেছে নিয়েছে। এটি তাদের কছে এক সাধারন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কেউ অভাবের তাড়নায়, কেউ বা আবার মেয়ের বিয়ে দিতে দালাল চক্রের মাধ্যমে ২-৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভিন রাজ্যে গিয়ে কিডনি বিক্রি করছে।

সম্প্রতি বালিয়া, খোকসা, মুকুন্দপুর, জালিপাড়া, ডোডরা গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা নিজেদের কিডনি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। এমনকি বাগডোগরা থেকে দিল্লীগামী বিমানে চেপে ৫ লক্ষ টাকায় নিজের কিডনি বিক্রি করতে পড়ি দিয়েছিলেন উত্তরদিনাজপুর জেলার বিন্দোলগ্রাম পঞ্চায়েতের জালি পাড়ার ২ জন পুরুষ এবং ২ জন মহিলা। জানা গিয়েছে এর মধ্যেই প্রায় ১০০ জন মানুষ টাকার বিনিময়ে নিজেদের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন।

এবিষয়ে জালি পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ‘পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সেভাবে কোন সাহায্য পাইনি। ১০০ দিনের কাজও পাইনি। বৃদ্ধ ভাতা এমনকি বিধবা ভাতাও মেলেনি। মাত্র ৪ কেজি চাল এবং ৬ প্যাকেট আটা দিয়ে কি করে হয়? তেল, সবজির দাম আগুন ছোঁয়া। বেশিরভাগ মানুষের কাজ নেই। এই পরিস্থিতিতে আমাদের কিডনি আমরা বিক্রি করছি, অন্যরা বাঁধা দেওয়ার কি আছে!’

স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা রুপা জালি এই ঘটনা প্রসঙ্গে চলেছেন, বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সহ হেমতাবাদ শেরপুর বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতেরও অনেকে তাদের কিডনি বিক্রি করছে। প্রথমে কিছু বোঝা না গেলেও, পরবর্তীতে শারীরিক সমস্যা হলেই সব ধরা পড়ছে’। আবার বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা মনসুর আলী জানিয়েছেন, “জালিপাড়া গ্রাম থেকে মানুষেরা অভাবে নয়, স্বভাবে কিডনি বিক্রি করছে। পঞ্চায়েতের তরফ থেকে তাদের যথেষ্ট সাহায্য করা হয়েছে’।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর