রত্নার সাথে বৈঠক বিজেপির সৌমিত্র, সুজাতার। সৌমিত্রের জয়ে প্রশংসা পঞ্চমুখ রত্না,জল্পনার শুরু।

উদয়ন বিশ্বাস : বাংলার আকাশের যখন পুজো পুজো গন্ধ। ঠিক সেই সময় বাংলার রাজনিতি নতুন সমীকরন তৈরি। তৃনমূল নেত্রী রত্না কি বিজেপির পথে পা বাঁড়িয়ে আছেন। হঠাৎ কেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের জয়ে প্রশংসা পঞ্চমুখ রত্না। এই সব নিয়ে মুখোমুখি মুখ খুললেন বিজেপি সংসদ সৌমিত্র খাঁ ও সুজাতা খাঁ। BanglaHunt এডিটার উদয়ন বিশ্বাসের সাথে মুখোমুখি।

images 2019 11 07T123912.837

সৌমিত্র খাঁ সাথে রত্না দেবীর বৈঠক এই খবর সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় আমাদের Bangla Hunt নিউজ পোর্টালে। Bangla Hunt এর সাথে সৌমিত্র খাঁর একান্ত ইন্টারভিউ এর প্রথম অংশের প্রকাশ গতকাল প্রকাশ পাওয়ার পর বাংলার একাধিক মিডিয়া খবরটি সম্প্রচারিত হয়। আজ দ্বিতীয় অংশের ইন্টারভিউ তুলে ধরলাম। বাকি অংশ আগামী প্রতিবেদনে আসছে নজরে থাকুন Banglahunt সাইটে !

প্রশ্ন- রত্না দেবীর সাথে দেখা হবে জানতেন?

সৌমিত্র খাঁ – হ্যাঁ,কারন আমরা যে উকিলের বাড়ির পুজোতে গিয়ে ছিলাম সেখানে শুধু রত্না দেবী নয় আরো বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ব্যাতিরা আসার কথা ছিলো

প্রশ্ন- রত্না দেবীর সাথে রাজনৈতিক বিশয় কি কথা হলো?

সৌমিত্র খাঁ – একটু হ্যাঁসে সৌমিত্র বাবু বলেন সেটা মিডিয়ার সামনে বলা যাবে না,কিন্তু রাজনৈতিক বিশয়ের কথা হয়েছে।আগামীদিন কি ভাবে রাজনিতি করা যায়৷

প্রশ্ন – আপনি ও হলুদ ও রত্না দেবী ও হলুদ রঙের জামা পরে গিয়ে ছিলো,এটা কি করে সম্ভব,যেমন টা বৈশাখ-শোভন একি রঙের জামা পড়ছে।

IMG 20191108 094904

সৌমিত্র খাঁ – না,না এমন কোন বিশয় না। পুজোর বাড়িতে শুভ কাজে এসেছি,হলদু ভালো লাগে রত্না দেবী ও শুভ কাজে এসেছেন তাই উনি ও হয়তো হলুদ রঙের জামা পড়েছেন। একটু হ্যাঁসে গেরুয়াও পড়েনি? তা হলে এতো চিন্তা কেন। তার শোভন-বৈশাখী তো অবৈধভাবে জীবন যাবন করেন তাই ওনার ব্যাপার টা বলতে পারবো না

প্রশ্ন- রত্না দেবীকে বিজেপিতে আসার জন্য সৌমিত্র ম্যাজিক কে কাজে লাগাছে বিজেপি

সৌমিত্র খাঁ – না,বিজেপি পিছন থেকে রাজনিতি করে না।

প্রশ্ন- রত্না দেবী কবে বিজেপিতে যোগদান করতে পারে?

সৌমিত্র খাঁ -সেটা রত্না দেবীকে প্রশ্ন করলে ভালো হবে আমি বলতে পারবো না। কিন্তু যদি ইচ্ছা প্রকাশ করে তা হলে দলে স্বাগত।

প্রশ্ন- আপনার মুখোমুখি বসে প্রায় ৪৫মিনিট কথা বললেন,প্রসাদ খেলেন এবং সাংসদ হিসাবে জেতার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন

সৌমিত্র খাঁ – হ্যাঁ সব করেছি কারন পাটি আলাদা হতে পারে কিন্তু আমরা দিনের শেষে মানুষ৷ সৌজন্যে থাকা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। তার আমিও রত্নাদেবীর রাজনৈতিক ভাবে শুভেচ্ছা জানালাম।

প্রশ্ন – সেতুবন্ধ করে কি রত্না দেবীকে বিজেপি আনার কাজটা সৌমিত্র খাঁয়ের উপর পড়লো?

সৌমিত্র খাঁ – দেখুন কি হবে সেটা এখন থেকে বলতে পারবো না,তবু বলি রত্না দেবী ভালো মানুষ প্রকৃত মানুষ। তাই এমন মানুষ বিজেপিতে আসলে দলের পক্ষে ভালো

প্রশ্ন – রত্না দেবী যদি বিজেপিতে আসে তা হলে কি বেহালা পৌরসভা ও বিধানসভা তে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হবে?

সৌমিত্র খাঁ – যদি আসে তা হলে বেহালা, কালিঘাট,ও দক্ষিন২৪পরগনা দায়িত্ব দেওয়া হবে। কারন বেহালা তিনি দীর্ঘদিন রাজনিতি করেছেন আর ২৪পরগনাতে তার বাবা বিধায়ক ফলে আমরা কাজে লাগাতে পারবো। আর রত্না দেবীকে তৃনমুল কিছুই দেইনি বরং তাতে ব্যাবহার করা হয়ছে।এদিকে বিজেপি নেতা শোভন-বৈশাখী কে রাখি পড়াছেন তাতে রত্না দেবীর কাছে কিছুটা হলেও চাপের।

সৌমিত্র খাঁ সাথে যখন বাংলা হান্টের মুখোমুখি প্রশ্ন যাচ্ছে সেই সময় তার পাসে বসে আছেন বিজেপি নেত্রী সুজাতা খাঁ বসে বসে রাজনৈতিক আনন্দ উপভোগ করছেন

প্রশ্ন- আপনাকে সাংসদ হওয়ার জন্য রত্না দেবী কি বললেন?

সুজাতা খাঁ – বলেন এখন বাংলার লড়াকু মহিলা মুখ সুজাতা,এবং গত লোকসভাতে যে ভাবে লড়াই করেছি তার জন্য ধন্যবাদ জানানা।

প্রশ্ন – কথা শুরুতে রত্না দেবীকে পাসে বসিয়ে আপনি মমতার ব্যানার নাম করে তীব্র সমালোচনা করলেন চুপ থাকলেন কেন রত্না দেবী?

সুজাতা খাঁ – হ্যাঁ যেটা সত্যি সেটা বলছি। আমার স্বামী বিজেপি যোগদানের পর যে অত্যাচার শাষক দল ও পুলিশ করেছে তা আমি সবার সামনে বলবো। রত্না দেবী প্রতিবাদ করেনি কারন তিনি হয়তো নারীর সন্মান টা বুঝতে পেরেছেন।

প্রশ্ন – রাজনিতি নিয়ে কথা হলো?

সুজাতা খাঁ – হয়েছে,কি হয়ছে মিডিয়ে বলাযাবে না।,তবু বলি সৌমিত্রের জয়ে রত্না দেবী খুশি

প্রশ্ন- বিজেপিতে আসার ব্যাপারে কথা হয়েছে

সুজাতা খাঁ- একটু হ্যাঁ, বলেন সিনেমার টেলার চলছে পুরো সিনেমাটা যদি বলে দেই তা হলে তো সিনেমার মজাটা থাকবে নয়। কিন্তু দলের স্বাগত

প্রশ্ন- আপনি তৃনমুলের সমালোচনা করলেন আর রত্না দেবী কিছু প্রতিবাদ করল না

সুজাতা খাঁ- না,তিনি কোন প্রতিবাদ করেননি এবং উনার সাথে যারা এসেছিল তারা কোন প্রতিবাদ করেননি বরং বলেছেন আগামীদিন যাতে রাজনীতিতে সুজাতা আরো দূর এগিয়ে যেতে পারে, একটিবারও তিনি মোদীজি বা বিজেপির নামে বাজে কথা বলেনি।

প্রশ্ন- প্রসার খাওয়ার পর সৌমিত্র খাঁ বাইয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার পর আপনি দীর্ঘ সময় বৈঠক করলেন? কি নিয়ে কথা হলো

সুজাতা খাঁ – সেটা নারী সন্মান নিয়ে কথা হয়েছে,শোভন বৈশাখী যে অবৈধভাবে জীবন যাবন করেছেন সেটা নিয়ে কথা, আর রত্না দেবী শাষকদলের যে অত্যাচার করেছিল তা নিয়ে বললাম।

প্রশ্ন- রত্না দেবী সাথে সুজাতার প্রায় ১৮মিনিট কথা হয়, সেখানে সুজাতার প্রসংশা করলে আর আপনি যখন তৃনমূল নামে সমালোচনা করছেন সেই সময় সৌমিত্র খাঁ আপনাকে বাধা দেয় কিন্তু রত্না দেবী বলেন না না আপনি বলতে পারেন

সুজাতা খাঁ – হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন আমি যখন রত্না দেবী সামনে শাসক দল সমালোচনা করছি এবং মুখ্যমন্ত্রীর নাম ধরে সমালোচনা করছি সেই সময় সাংসদ সৌমিত্র খান পাশে বসে ছিল একসাথে আমরা খাচ্ছিলাম আমাকে সৌমিত্র বাবু আমাকে থামতে বলে কিন্তু উনি বলেন না না আপনি বলতে পারেন, কারণ রাজনীতির বাইরে আমাদের একটা জগত আছে,এখানেই আমি থেমে থাকিনি, ভোট পরবর্তী সময় যে হিংসা হয়েছে এবং বিজেপি তাকে যে গুরুত্ব দায়িত্ব দিয়েছে সেই জন্য বিজেপিকে তার জন্য ধন্যবাদ জানালেন সব কথা রত্না দেবী শুনলেন, তৃনমুল নিয়ে একটি কথাও হয়নি, তার প্রতিবাদ ও হয়নি।

জগদ্ধাত্রী পুজোর কলকাতা হাইকোর্টের উকিল এর বাড়িতে গিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও তার স্ত্রী সুজাতা খাঁ তারা প্রথমে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর প্রণাম করেন, তারপর প্রসাদ গ্রহণ করেন। সেই সময় হাজির হয় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় প্রথম সৌমিত্র এবং সুজাতা ও রত্না দেবী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারপর একসাথে বসে দীর্ঘক্ষন আলোচনা হয়। সবশেষে তারা প্রসাদ খান একসাথে এবং সৌমিত্র খাঁ প্রসাদ খেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও সুজার সাথে সাথে রত্না দেবীর একাধিক বার প্রশ্ন বিনিময় হয় এবং তারা দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষন কথা বলেন। এর ফলে প্রশ্ন উঠছে কি সেই কথা হয়েছিল রত্না দেবীর সাথে? সৌমিত্র খাঁ এই নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন কিন্তু সৌমিত্র খাঁ ও রত্না দেবী জানিয়েছেন এটি নিছকই একটি সৌজন্যে অনুষ্ঠান। এখানে কোন রাজনীতির বিষয় নেই কিন্তু একাধিক প্রশ্নের উত্তর উঠে যাচ্ছে।

সুজাতা যখন তৃণমূলের হয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করছেন, তখন কেন চুপ ছিলেন রত্না দেবী? সুজাতার আগামী ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি কেন শুভেচ্ছা জানালেন কারণ বিজেপি সুজাতা খাঁ জয়লাভ করে তাহলে তো তার নিজের দল তৃণমূলের ক্ষতি হবে। সুজাতা কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলের যখন একের পর এক নেতারা ঘর ভাঁঙছে তখন সেই সময় রত্নাদির এই শুভেচ্ছা বিনিময় এবং তাদের শুভকামনা করলেন ঠাকুর মঞ্চে দাঁড়িয়ে। রত্না দেবী বিজেপির যাওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হলেও সবাই এটাকে সৌজন্য বিনিময় বলেছেন

সম্পর্কিত খবর