সবচেয়ে বড় যোদ্ধা! সন্তানকে কোলে নিয়েই টোটো চালাচ্ছেন মা, কুর্ণিশ জানাচ্ছেন যাত্রীরা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেকের কাছেই তাঁদের মা (Mother) হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। এই পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে বড় কেউ আর হতেই পারে না। পাশাপাশি, একজন মা-ও তাঁর সন্তানের জন্য সারা বিশ্বের সাথে লড়াই করতে পারেন। সন্তানকে ভালো রাখতে বা সন্তানের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়ে সেদিকেই সবসময় সতর্ক থাকেন তিনি। আর তাই তো প্রতিটি মাকেই ঈশ্বরের সাথে তুলনা করা হয়। এমতাবস্থায়, সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে ফের মাতৃশক্তির জয়গান সূচিত হয়েছে। মূলত, নয়ডার (Noida) রাস্তায়, একজন মহিলাকে তাঁর সন্তানকে কোলে নিয়েই টোটো চালাতে দেখা গেছে।

দেড় বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে টোটো চালাচ্ছেন মা: এমনিতেই বর্তমানের ব্যস্ততার জীবনে মানুষের কাছে অন্যদেরকে নিয়ে ভাবার সময়ে কমে আসছে। কিন্তু, তাও মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা সামনে আসে যা সরাসরি মনের মণিকোঠায় পৌঁছে যায় সকলের। এই ঘটনাটিও ঠিক সেইরকম। ইতিমধ্যেই টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ২৭ বছর বয়সী চঞ্চল শর্মা নয়ডার রাস্তায় একটি টোটো চালান। এমতাবস্থায়, চঞ্চল তাঁর এক বছরের পুত্রসন্তানকে কোলে নিয়েই প্রতিদিন টোটো চালাচ্ছেন।

   

সন্তানের সঙ্গে থাকার জন্য তিনি এই কাজ শুরু করেন: চঞ্চল নয়ডা সেক্টর ৬২-তে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিক্যালস থেকে সেক্টর ৫৯-এর লেবার চকের রুট পর্যন্ত টোটো চালান। এমতাবস্থায়, তিনি ছাড়া ওই ৬.৫ কিলোমিটার পথে আর কোনো মহিলা এই কাজ করেন না। এই প্রসঙ্গে চঞ্চল জানিয়েছেন যে, তাঁর পুত্র অঙ্কুশের জন্মের দেড় বছর পর তিনি চাকরি খুঁজতে শুরু করেন এবং অবশেষে টোটো চালাতে শুরু করেন।

যাত্রীরা ভূয়সী প্রশংসা করেন তাঁর: পাশাপাশি, চঞ্চল আরও জানিয়েছেন যে, তাঁর টোটোতে বসে সমস্ত যাত্রীই তাঁর প্রশংসা করেন। চঞ্চলের কথায়, “যাত্রীরা আমার প্রশংসা করেন। কারণ আমি নিজেই সবকিছু সামলাচ্ছি। মহিলারা আমার টোটোতে বসতে পছন্দ করেন।”

single mother,Noida,Toto,Mothetr,Son,e-rickshaw,Passenger,Salute,India,National

স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়েছেন তিনি: NIOS (National Institute of Open Schooling) থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা চঞ্চল এখন তাঁর স্বামীর কাছ থেকে আলাদা থাকেন। এই প্রসঙ্গে চঞ্চল জানান, অঙ্কুশকে একা ছেড়ে যেতে পারেননি তিনি। চঞ্চলের কথায়, “আমার মা পেঁয়াজ বিক্রি করেন। আর ভাই বাড়িতে থাকে না। তাই আমি যখন গাড়ি চালাই, তখন আমি আমার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে যাই।” কখনও কখনও তিনি তাঁর সন্তানকে তাঁর মায়ের কাছে অথবা বোনেদের কাছেও রেখে আসেন। তবে, বেশিরভাগ সময়টাই অঙ্কুশ তাঁর সাথেই থাকে। এমতাবস্থায়, জানা গিয়েছে, চঞ্চল দৈনিক ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করেন। যার মধ্যে ৩০০ টাকা যায় প্রাইভেট এজেন্সিতে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর