১৯১৮ সালে জয় করেছিল ভারতীয় সেনা, ইজরায়েলের সেই ঐতিহাসিক বন্দর কিনলেন গৌতম আদানি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ধনকুবের গৌতম আদানি (Gautam Adani) সমগ্ৰ বিশ্বেই তাঁর প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করছেন। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই তাঁর কোম্পানি আদানি পোর্টস (Adani Ports) ভারতের বৃহত্তম পোর্ট অপারেটর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, এবার আদানি পোর্টসের পরিধি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও ছড়িয়ে পড়ছে। জানা গিয়েছে, গৌতম আদানির কোম্পানি এখন ইজরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাইফা বন্দরকে প্রায় ৯,৫০০ কোটি টাকায় লিজ নিতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ইজরায়েল সরকারের পাশাপাশি গৌতম আদানিও সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন।

গভীর রাতে ট্যুইট করেন গৌতম আদানি: গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় এই তথ্য জানিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন গৌতম আদানি। পাশাপাশি, ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন “আমাদের সঙ্গী গ্যাডোটের সাথে ইজরায়েলের হাইফা বন্দরের বেসরকারীকরণের জন্য টেন্ডার জেতার ক্ষেত্রে আমরা আনন্দিত। এটি উভয় দেশের জন্য কৌশলগত এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। হাইফাতে থাকতে পেরে গর্বিত, যেখানে ভারতীয়রা ১৯১৮ সালে সামরিক ইতিহাসের সবচেয়ে দর্শনীয় অশ্বারোহী বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।”

স্থানীয় কোম্পানি গ্যাডোট আদানির অংশীদার হয়ে উঠেছে: উল্লেখ্য যে, ইজরায়েলের এই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। বর্তমানে ভূমধ্যসাগর উপকূলে অবস্থিত এই বন্দরটি বাণিজ্যের অন্যতম বড় কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হয়। এই প্রসঙ্গে ইজরায়েল জানিয়েছে, ভারতীয় কোম্পানি আদানি পোর্টস এবং স্থানীয় কেমিক্যাল অ্যান্ড লজিস্টিক কোম্পানি গ্যাডট একসঙ্গে এই বন্দর কিনতে চলেছে। উভয় সংস্থা একসাথে ৪.১ বিলিয়ন শেকেলেসের জন্য বিড করেছিল। উল্লেখ্য যে, শেকেলস (Shekels) হল ইজরায়েলের সরকারী মুদ্রা। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯,৪২৯ কোটি টাকা।

আদানি পাল্টে দেবেন ইজরায়েলের ছবি: প্রায় দুই বছরের টেন্ডার প্রক্রিয়ার পর, গ্যাডোট এবং আদানি এই সাফল্য পেয়েছে। পাশাপাশি, ইজরায়েল মনে করছে যে আদানির হাতে বন্দরের দায়িত্ব আসায় আমদানির ব্যয় হ্রাস হবে এবং দীর্ঘ সময় পর ইজরায়েলি বন্দরের ছবিও পাল্টে যাবে। এই প্রসঙ্গে ইজরায়েলের অর্থমন্ত্রী আভিগডোর লিবারম্যান বলেছেন, “হাইফা বন্দরের বেসরকারীকরণ বন্দরে প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় কমবে।”

আদানির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে: এই প্রসঙ্গে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ওই চুক্তির আওতায় আদানি পোর্টসের হাতে এই বন্দরের ৭০ শতাংশ শেয়ার থাকবে। শুধু তাই নয়, এই বন্দরের মালিকানা পাওয়ার পর চিনের সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতায় নামবে আদানি। কারণ, এই উপসাগরের কাছে সম্প্রতি একটি নতুন বন্দর শুরু হয়েছে। যা চিনা কোম্পানি সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল পোর্ট গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

২০৫৪ সাল পর্যন্ত বন্দর পরিচালনা করবেন আদানি: উল্লেখ্য যে, ইজরায়েলের মোট বাণিজ্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ সমুদ্রপথে হয়। এমতাবস্থায়, অর্থনৈতিক উন্নতির রেশ ধরে রাখতে সরকার প্রতিনিয়ত এই খাতে উন্নয়ন করছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিবেশী আরবের দেশগুলির সঙ্গেও ইজরায়েলের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। আর এটি আদানির পাশাপাশি ইজরায়েলকেও উপকৃত করবে। কারণ আরবের দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য হাইফা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০৫৪ সাল পর্যন্ত আদানির নিয়ন্ত্রণে থাকবে এই বন্দর।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর