বাংলা হান্ট ডেস্ক : শরীরে ছিলনা একটা সুতোও। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় যাদবপুর (Jadavpur University) হস্টেলের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় স্বপ্নদীপের রক্তে ভেসে যাওয়া শরীর। তদন্ত চালতে গিয়ে উঠে এসেছে একটার পর একটা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। যার মধ্যে রয়েছে একটি হলুদ ডায়েরিও (Yellow Diary)। এই সেই হলুদ ডায়েরির পাতা থেকেই উদ্ধার হয়েছিল একটি রহস্যময় চিঠি। আর সেই চিঠি নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কারণ সেই ডায়েরির একটি পাতা ভাবাচ্ছে তদন্তকারী অফিসারদের।
উল্লেখ্য, এই হলুদ ডায়েরিটি উদ্ধার হয়েছে মেন হোস্টেলেরই একটি রুম থেকে। ৩৩২ পাতার ওই ডায়েরির ১৯৯ নম্বর পাতা নিয়েই যত গলোযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, ডায়েরির ঐ পাতা সইয়ে সইয়ে ছয়লাপ। আর সেই সব সই-ই মৃত ছাত্রের। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কেউ মৃত ছাত্রের সই নকল করার চেষ্টা করেছেন! কে বা কারা এই কাজে যুক্ত রয়েছেন সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন পুলিশ।
উল্লেখ্য, প্রথমেই ওই ডায়েরিতে একটি চিঠি লেখা পাতা খুঁজে পান তদন্তকারী অফিসাররা। চিঠিটি লেখা হয়েছিল ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’-এর উদ্দেশে। আর সেই চিঠির নীচে ছিল মৃত পড়ুয়া স্বপ্নদীপের সই। এবং চিঠির শুরুতেও রয়েছে তাঁর নাম। গোটা চিঠিটিই র্যাগিং নিয়ে। চিঠির পরতে পরতে লেখা রয়েছে, কীভাবে সিনিয়ররা হস্টেলের পরিবেশ নিয়ে ভয় দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুন : ‘র্যাগিং থেকে মদ-গাঁজা সবই চলত, বাধা দিলে করত গালিগালাজ’, বিষ্ফোরক যাদবপুর হস্টেলের সুপার
এই চিঠিটি সামনে আসতেই উঠে এসেছিল একাধিক প্রশ্ন। যারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল চিঠির তারিখ। চিঠিতে দেওয়া তারিখটি ছিল ১০ অগাস্ট। এদিকে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল ৯ অগাস্ট। মৃত্যুর পর কীভাবে চিঠি লিখলেন পড়ুয়া? এরপরেই ধৃতদের রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশি জেরায় ধৃত দীপশেখর দত্ত স্বীকার করে নেন যে, ঐ চিঠি তারই লেখা। এখন পুলিশ তদন্ত করে দেখছে ওই ডায়েরি থেকে আরও নতুন কোনও তথ্য সামনে আসে কিনা।
আরও পড়ুন : ‘এমন ভাব করছেন যেন যাদবপুরে…..’ স্বপ্নদীপ কাণ্ডে এ কী বললেন জুন আন্টি ঊষসী? ছড়াল বিতর্ক
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি হস্টেলের ছেলেদের আচার ব্যবহার নিয়ে মুখ খুলেছেন হস্টেল সুপার এবং নিরাপত্তারক্ষীও। এক সর্বভারতীয় মিডিয়া চ্যানেলের সামনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে হস্টেল সুপার জানিয়েছেন, র্যাগিং-এর সঙ্গে রমরমিয়ে বসত নেশার আসর। পাশাপাশি মদ ও গাঁজা খাওয়ার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। তার অভিযোগ, এইসব কাজে বাধা দিতে গেলেই নাকি গালিগালাজ করত হস্টেলের ছাত্ররা। এইদিন একই সুর শোনা গেল নিরাপত্তারক্ষীর গলাতেও। সবে মিলিয়ে রাজ্যের সেরা একটা ইউনিভার্সিটির ভেতরে যে ঘুণ ধরেছে সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।