ডাক্তার, নার্সদের বিক্ষোভে ব্যাহত মেডিক্যাল কলেজের পরিষেবা, চূড়ান্ত ভোগান্তিতে রোগীরা! দায়ের মামলা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একাধিক ইস্যুতে থমথমে পরিস্থিতি কলকাতা মেডিকেল কলেজে (Calcutta Medical College Hospital)। একদিকে চলছে জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্সদের বিক্ষোভ, চূড়ান্ত ভোগান্তিতে রোগীরা, অন্যদিকে পরিষেবা না পেয়ে কলেজের তালা ভাঙলেন রোগীর পরিজন। সবমিলিয়ে রণক্ষেত্র দশায় কলকাতা মেডিকেল কলেজ।

ঠিক কোন বিষয় নিয়ে ধুন্ধুমার কলকাতা মেডিকেল কলেজ? অশান্তির সূত্রপাত হয় সোমবার রাতে। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন (Students Union Election) কে কেন্দ্র করে আগামী ২৬ ডিসেম্বর ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপাতত তা স্থগিত করে দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন (Swasthya Bhawan)। এই নিয়ে রাগে ফেটে পড়েছেন পড়ুয়া ও জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। ভোট চায় তারা। এই দাবিতেই চলছে ক্ষোভ প্রদর্শন, কলেজ চত্বর জুড়ে হচ্ছে বিক্ষোভ। একদিকে ছাত্র সংসদ ভোটের দাবিতে রাতভর ঘেরাও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাসপাতালের নার্সরাও। কলেজের নার্স সুপারকে ছাড়ার দাবিতে ক্ষোভ প্রদর্শন করছেন তারা।

   

কলেজের অধ্যক্ষ এবং বিভাগীয় প্রধানদের আটক করে রেখেছেন কলেজের জুনিয়র ডাক্তার সহ পড়ুয়ারা। ভোটের দাবিতে বিক্ষোভে অনড় আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা কেউ আউটডোরেও (OPD) যাননি বলেও জানা যাচ্ছে। জোড়া বিক্ষোভে বিপাকে পড়ছেন হাসপাতাল রোগীরা। আর এরই জেরে কোনো রকম চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে পাল্টা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন রোগীর পরিজনেরা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে হাই কোর্টে মামলা করেছেন এক রোগীর আত্মীয়। এমন কি ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের এমনকি, ইট দিয়ে গেটের তালা ভাঙতে দেখা যায় রোগীর পরিজনদের। কিন্তু পরে বিক্ষোভকারীরা আবার চেন দিয়ে গেট আটকে দেন।

রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, বিক্ষোভের দরুন চিকিৎসা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষজন। দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছেনা পরিষেবা। চিকিৎসা না পেয়ে তাই পাল্টা তারাও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি হাসপাতালে ভরতি রোগীদের চিকিৎসায়ও বড়সড় গাফিলতি দেখা গিয়েছে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে, এমনকি চিকিৎসা পাননি ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও।

বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের পর আর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। বহু দিন ধরেই ভোট নির্বাচনের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ চলছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। কলেজের তরফে জানানো হয়েছিল, ২২ ডিসেম্বরে ভোট নির্বাচন সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। তা পিছিয়ে নেওয়া হয় কলেজ তরফে। তবে ভোট করানোর দাবিতে অনড় চিকিৎসকরা। সেই নিয়েই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে জুনিয়র চিকিৎসকরা।

doc protest

বিক্ষোভের ঘটনার জেরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন রোগীর আত্মীয়। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, চিকিৎসক ও নার্সদের অনড় মনোভাবের জন্য মেডিক্যাল কলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে গেলে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে, চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর