অবলা বানরদের রক্ষা করতে ছেড়েছেন ঘর! আট বছর ধরে জঙ্গলে থেকে দিচ্ছেন মাতৃস্নেহ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যখন বিশ্বায়নের যুগে পশু-পাখি তথা অবলা প্রাণীদের কথা না ভেবেই নির্বিচারে প্রকৃতির ওপর ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে মানুষ ঠিক সেই আবহেই এমন এক ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে যা অবাক করে দেবে সবাইকেই। বনের প্রাণীদের রক্ষা করতেই কার্যত নিজের জীবন অতিবাহিত করেছেন তিনি। এমনকি, নিজের বাড়ি ছেড়ে জঙ্গলেই পশু-পাখিদের মাঝে কুঁড়েঘর বানিয়ে থাকছেন উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার এক প্রবীণ নারী।

মূলত, চলতি বছরের তীব্র দাবদাহে সকলেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এমনকি, এই সময়ে পুকুর সহ বিভিন্ন জলাশয়ের জলও শুকিয়ে যেতে শুরু করে। যার ফলে তীব্র জলকষ্টে ভুগতে হয় বনের প্রাণীদের। এমতাবস্থায়, তাদের জন্য খাওয়ার ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও করেছেন রাণী নামের ওই বৃদ্ধা।

জানা গিয়েছে যে, বান্দার কাটরার ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধা রাণী ওরফে কুশমা বেশ কয়েক বছর যাবৎ এই প্রশংসনীয় কাজ করছেন। এমনকি, তিনি বহু বছর ধরে বাঘাই নদীর ধারে স্থিত দেবীর স্থানের কাছে তাঁর একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করেন। এই প্রচণ্ড গরমে তিনি অবলা পশুদের কাছে কার্যত ত্রাতার ভূমিকা পালন করছেন। এমনকি, উত্তরপ্রদেশে ও মধ্যপ্রদেশের বনাঞ্চলে বানরদের জীবন যাতে সঙ্কটে না পড়ে সেই কারণে তিনি বাড়ি ছেড়ে জঙ্গলেই তাঁদের ওপর নজর রাখেন।

৮ বছর ধরে এই মহৎ কাজ করছেন তিনি:
এই প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রাণী বনে তাঁর কুঁড়েঘরে থাকাকালীন গত ৮ বছর ধরে এই বানরদের যত্ন নিয়ে আসছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন ততদিন এই কাজ চালিয়ে যাবেন। মূলত, রাণীর পরিবার কালিঞ্জর এলাকার কাটরায় থাকে। কয়েকদিন আগে তাঁর এক ছেলে মারা যায়। অপরদিকে, বাকি তিন ছেলে তাঁদের পরিবার নিয়ে গ্রামে থাকেন। তাঁরা মাঝে মধ্যে জঙ্গলে রাণীর সাথে দেখাও করতে আসেন।

জানা গিয়েছে যে, স্থানীয় বাসিন্দারাও রাণীর এই কাজে সাহায্য করেন। পাশাপাশি, তাঁরা পশু-পাখির খাদ্যসামগ্রীও রাণীকে দিয়ে যান। সেই সাথে এই বানরগুলিও রাণীকে অত্যন্ত ভালোভাবে চিনে গেছে। বনের কাছে রাণীর ২ বিঘা জমি আছে। রানী সেখানে গেলেই বানররাও তাঁকে অনুসরণ করে।

Banda,Uttar Pradesh,Mother,Raani,monkeys,Help,Food,India,National,Forest,Water

এই প্রসঙ্গে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রাণী এই বানরগুলোর নামও রেখেছেন। রাণী ডাক দিলেই পাপ্পু, চুন্নু, মুন্নু কালুরা ছুটে আসে। আর এভাবেই রীতিমতো মাতৃস্নেহে অবলা প্রাণীদের জীবন বাঁচাতে ব্রতী হয়েছেন রাণী। এদিকে, তাঁর এই অভিনব জীবনযাপন এবং পশুপ্রেমের খবর প্রকাশ্যে আসতেই স্বাভাবিকভাবে রাণীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সকলে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর