আসল বন্ধুত্বঃ অসুস্থ বন্ধু অমৃতের শেষ নিঃশ্বাস অবধি তাঁর পাশে থাকল বন্ধু ইয়াকুব

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনার সংকটের মধ্যে সুরাটের (Surat) এক ঘটনা মানুষকে মর্মাহত করেছে। লকডাউনের (Lockdown) মধ্যে ভিন দেশ থেকে পরিযায়িরা বাড়ি ফেরার জন্য ক্রমাগত সংগ্রাম করে চলেছে। প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ মানুষের চিত্র ফুটে উঠেছে শহররে রাস্তায়, যারা বাড়ি ফেরার আশায় উৎসুক হয়ে রয়েছে। এরই মাঝে এমন এক বন্ধুত্বপূর্ণ ঘটনা সকলের সামনে আসল, যা মানুষের হৃদয়ে বেদনার সৃষ্টি করেছে।

দুই বন্ধুর বন্ধুত্ব
শিবপুরীতে দুই বন্ধুর বিরলতম এক বন্ধুত্বের চিত্র সকলের প্রকাশ্যে এসেছে। এক বন্ধু অপর বন্ধুর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাঁর কাছ ছাড়া হয়নি। তাঁদের এই বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত বর্তমানে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।

আচমকা অসুস্থ হয়ে পরে এক বন্ধু
করোনার সন্দেহভাজন উত্তরপ্রদেশের বাসতি জেলার ২৪ বছর বয়সী অমৃত একটি ট্রাকে করে গুজরাটের সুরাট থেকে তাঁর বাড়িতে ফিরছিলেন। আরও অনেক যাত্রি সমন্বিত ট্রাকটি মধ্য প্রদেশের শিবপুরি-ঝাঁসি ফোরলেন অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকাই অমৃতের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।

সাথ ছাড়লনা বন্ধু
ট্রাক মধ্যস্থ মানুষজন আশঙ্কা করলেন যে, অমৃত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাই ট্রাক থেকে তাঁকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। লোকজন অমৃতকে ট্রাক থেকে নামিয়ে দূরে সরিয়ে রাখলেও, বন্ধু ইয়াকুব মোহাম্মদও স্থির করলেন অমৃতের সাথেই থাকবে। ইয়াকুবের কলে মাথা রেখেই শুয়ে পড়েন অমৃত।

হাসপাতালে নিতে গেলেও শেষ রক্ষা হয় না
সন্ধ্যার মধ্যেই ইয়াকুব অমৃতকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয় না। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মারা যায় অমৃত। মৃত্যুর শেষ সময় পর্যন্ত অমৃতের পাশ ছাড়েননি ইয়াকুব। তবে চিকিৎসায় বলম্বের কারণে বন্ধুকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ইয়াকুব।

সঙ্গীদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে
২৩ বছর বয়সী ইয়াকুব মোহম্মদের পুত্র মোহম্মদ ইউনুস জেলা হাসপাতাল থেকে জানান, আমরা দুজন গুজরাটের সুরাটে কাপড় তৈরির কারখানায় কাজ করতাম। লকডাউনের জেরে তারা ট্রেনে ৪ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে ইন্দোরের নাসিক হয়ে কানপুর ফিরছিলেন। যাত্রাপথে হঠাৎ অমৃতের জ্বর বেড়ে যায় এবং বমি হতে শুরু করলে, ট্রাক মধ্যস্থ লোকজন তাঁকে নামিয়ে দেয়। আমরাও নেমে যাই। অমৃতের সঙ্গী দুজনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর