কাউকে চ্যাংদোলা তো আবার কাউকে টেনেহিঁচড়ে তুললো পুলিশ! চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নামঞ্চে বিশৃঙ্খলা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা নিয়ে বিগত বেশ কয়েকমাস ধরে ভয়ঙ্কর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে গোটা বাংলায়। স্কুল সার্ভিস কমিশন হোক কিংবা প্রাইমারি টেট দুর্নীতি, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ না দিয়ে অন্যদের টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ সামনে এসে চলেছে। একদিকে যেমন কলকাতা হাইকোর্ট দ্বারা একের পর এক মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার ফলে ক্রমশ দেওয়ালে পিঠ থেকে চলেছে রাজ্য সরকারের, ঠিক সেরকম ভাবেই ক্রমাগত রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছে বহু চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের একটাই দাবি, ‘সঠিকভাবে কাউন্সেলিং করে শিক্ষক পদে নিয়োগ করা।’

তবে অতীতেও একাধিকবার এই আন্দোলনগুলি বলপূর্বক আটকে দিতে দেখা যায় পুলিশকে আর এদিনও শহীদ মিনারের নীচে একই ঘটনার সাক্ষী থাকলো সকলে। উল্লেখ্য, বিগত 70 দিন ধরে ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরা রোডে শহীদ মিনারের নীচে বিক্ষোভে শামিল হয় বেশ কয়েক আন্দোলনকারীরা। এসএলএসটি-তে নিয়োগ করার দাবিতে ক্রমাগত আন্দোলন দেখিয়ে চলেছে তারা। এর আগেও একাধিকবার এই আন্দোলন ছত্রভঙ্গ হতে দেখা যায় আর এদিনও সকল আন্দোলনকারীকে বলপূর্বক এবং জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এদিন আন্দোলনকারীদের ধর্না মঞ্চে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে বিক্ষোভ তুলে নিতে নির্দেশ দেয় পুলিশ। তবে তাতে রাজি না হলেই ঘটে যায় বিপত্তি!

একের পর এক আন্দোলনকারীকে একপ্রকার চ্যাংদোলা করে পুলিশ ভ্যানে তুলতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে বহু চাকরিপ্রার্থীরা আবার একে অপরের হাত ধরে থাকে, যাতে পুলিশি বাধা এড়াতে পারে। তবে কিছুতেই কোন লাভ হয়নি। কাউকে টেনে হিঁচড়ে তো কাউকে আবার বলপূর্বক চ্যাংদোলা করে নিয়ে যেতে দেখা যায় পুলিশকে। স্বভাবতই এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় বেশ কিছু আন্দোলনকারীকে। এক বিক্ষোভকারীর কথায়, “আমাদের এখান থেকে কেন তুলে দেওয়া হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। হঠাৎ করেই আমাদের ধর্না মঞ্চে এসে বিক্ষোভ তুলে নিতে বলে পুলিশ, কিন্তু তাতে রাজি না হওয়াতে আমাদের একপ্রকার বলপূর্বক টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে তারা।” পুলিশের ওপর ক্ষোভ উগরে অপর এক আন্দোলনকারী বলেন, “আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্নায় বসেছিলাম। কিন্তু আচমকা পুলিশ এসে আমাদের চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে; বর্তমানে রাজ্যে যারা ঘুষ খেয়ে চলেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অথচ আমরা যারা সঠিকভাবে নিয়োগের দাবিতে প্রতিবাদ করে চলেছি, তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটা অনুচিত।”

20220616 190428 0000

স্বভাবতই, এই ঘটনার দরুণ সমগ্র এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে এলাকায় ভিড় জমে যায়। তবে পরবর্তীকালে এই বিক্ষোভ আরো কত দূর বিস্তৃত হয় এবং তা ঠেকাতে পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সেটাই দেখার।

Avatar
Sayan Das

সম্পর্কিত খবর