টাইট ডেডলাইন! পশ্চিমবঙ্গের এই মামলায় তিন সপ্তাহের সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এখনও পর্যন্ত অব্যাহত বাংলার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার জট। একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। এই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। সেখানেই রাজ্যপালের তরফে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমণি রাজ্যের উপাচার্য নিয়োগ মামলায় বিচারকের কাছে আরও কিছুটা সময় চেয়ে নেন। একইসাথে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল ও রাজ্যের মতান্তর সংক্রান্ত বিষয়েও।

উপাচার্য নিয়োগ মামলায় সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)

ডিসেম্বরের শুরুর দিকেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের কাজ শেষ  হয়ে যাবে। তবে এদিন আবার উপাচার্য নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরও ৬ সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছে।

সর্বোচ্চ আদালতে (Supreme Court) বিচারপতি সূর্য কান্ত, দীপঙ্কর দত্ত এবং উজ্জল ভূঁইয়ার এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। আদালতে রাজ্যপালের তরফে আর ভেঙ্কটরমণি বলেন, ‘দয়া করে আরও কিছু সময় দেওয়া হোক। এই প্রক্রিয়ায় কিছু ইতিবাচক কাজ হয়েছে।’ উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতায় ১৭  টি নামের ক্ষেত্রে দুই তরফের জটিলতা কেটেছে বলেই দাবি করেন তিনি। সেইসাথে জানিয়েছেন আরও ১৭ টি নামের ক্ষেত্রে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। আগামী দিনে সেই মতপার্থক্য কাটিয়ে ফেলা হবে।

সংখ্যা কমিয়ে আনার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে এদিন তিনি বলেছেন, মুখবন্ধ খামে দুই তরফের মতপার্থক্যের কথা আদালতের (Supreme Court) কাছে জানাবেন। ভেঙ্কটরমণির কথায়, ‘আমি রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে কিছু মধ্যস্থতা করতে পারি। এক্ষেত্রে অনেক জটিল মানসিক আদানপ্রদান জড়িত। আশা করি, আমরা সংখ্যাটা কমিয়ে আনতে পারব।’

বিচারপতি সূর্যকান্ত দ্রুত এই কাজ শেষ করার কথা বলেন। তিনি জানান যে মুহূর্তে মতবিরোধ দেখা দেবে, সেই মুহূর্তে আদালত পদক্ষেপ নেবে। আদালতের মূল্যবান সময় বাঁচানোর কথা বলে বিচারপতি সূর্যকান্ত এদিন বলেন, ‘আমাদের অনুরোধ আমাদের সময় বাঁচান। যখনই মতপার্থক্য হবে আমাদের আরও সময় ব্যয় করতে হবে। তার থেকে আপনি নিজের পদ কাজে লাগিয়ে যত বেশি সম্ভব নাম চূড়ান্ত করে দিন।’

অন্যদিকে আদালতে উপস্থিত রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘১৭ সংখ্যাটি শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু ৩৪ এর মধ্যে মাত্র ১৭ টি হয়েছে।’ এরপরেই তিনি আদালতকে মনে করিয়ে দেন ৯ ডিসেম্বরের শেষ শুনানিতেও একই কথা বলা হয়েছিল রাজ্যপালের তরফে। কিন্তু তখনও সুপ্রিম কোর্ট তিন সপ্তাহ সময় দিলেও এখনও অর্ধেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি। এরপর তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা আট সপ্তাহ পিছিয়ে আছি’।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতার বদলে একি কাণ্ড! রাজ্য সরকারের প্রকল্প নিয়ে হৈচৈ

দু পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এদিন ছয় সপ্তাহের বদলে তিন সপ্তাহ সময় দিয়ে বিচারপতি সূর্যকান্ত জানান তাদের মনোভাব যেন রাজ্যপাল কে জানানো হয়। প্রসঙ্গত রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য পালের সঙ্গে সরকারের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আগেই। এই নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। তারপরেই উপাচার্য নিয়োগ বিবাদের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবিষয়ে খসড়া নিয়ম তৈরি করেছে।

Supreme Court

 

রাজ্যপালের মনোনীত তথ্য আচার্যকে সেখানে ৩ সদস্যের বাছাই কমিটি গড়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাজ্যপালের মনোনীত সদস্যকেই চেয়ারপার্সন করা হবে। তাই এই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরোর তরফ থেকে। তাঁদের দাবি রাজ্যে রাজ্যপালের ইচ্ছামত উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে। রাজ্যপালকে এই ক্ষমতা দেওয়া হলেও আসলে কেন্দ্র তাদের ইচ্ছামত উপাচার্য নিয়োগ করছে রাজ্যের বিশ্ব-বিদ্যালয়গুলিতে।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর