ব্রিটিশরা নখ উপড়ে দিয়েছিল, দাঁত ভেঙে ফেলেছিল যাতে মৃত্যুর সময় বন্দেমাতরম না বলতে পারেন মাস্টারদা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আমাদের দেশ এমনি এমনিই স্বাধীনতা অর্জন করেনি। ভারত স্বাধীন হওয়ার পিছনে ছিল লক্ষ লক্ষ স্বাধিনতা সংগ্রামীর ভূমিকা। সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ভারত স্বাধীন করার জন্য আত্মবলিদান করেছিলেন। সেরকমই এক স্বাধীনতা সংগ্রামী হলে সূর্য সেন, যাকে আমরা মাস্টারদা সূর্যসেন বলে চিনি। অবিভক্ত বাংলার চট্টগ্রাম আন্দোলনের মহান নায়ক ছিলেন মাস্টারদা। ১৮৯৪ সালে ২২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই মহান বিপ্লবী। মাস্টারদাকে ‘দ্য হিরো অফ চট্টগ্রাম” নামেও ডাকা হয়।

   

ইংরেজ শাসকরা মাস্টারদাকে এতটাই ভয় পেত যে, ওনাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছিল। তবে ওনার উপরে ইংরেজদের অত্যাচারের কাহিনী এখানে শেষ হয়ে যায় না। মাস্টারদাকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানোর ঠিক আগের মুহূর্তে ওনার দাঁত ভেঙে দিয়েছিল অত্যাচারী ইংরেজরা। উনি যাতে ‘বন্দেমাতরম” ধ্বনি না দিতে পারেন, সেই কারণেই ওনার দাঁত ভেঙে ছিল ইংরেজরা। ওনার হাতের নখও উপড়ে নিয়েছিল ইংরেজ শাসকরা। কিন্তু মাতৃভূমির জন্য সবকিছু হাসিমুখে সহ্য করে নিয়েছিলেন।

১২ জানুয়ারি ১৯৩৪ সালে চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল জেলে সূর্য সেনকে ওনারই সঙ্গী তারকেশ্বর দত্তের সঙ্গে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছিল। কিন্তু মাস্টারদাকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানোর আগে ইংরেজরা ওনার উপর অনেক অত্যাচার করেন। এমনকি ওনার মৃতদেহ একটি ধাতব বাক্সে বন্দি করে বঙ্গোপাসাগরে ছুঁড়ে ফেলেছিল ইংরেজরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার যেই ফাঁসিকাঠে মাস্টারদাকে ঝোলানো হয়েছিল, সেই ফাঁসিমঞ্চকে সূর্যসেন স্মারক হিসেবে সংরক্ষণ করে।

ভারত ডিসকভারি ডট ওআরজি অনুযায়ী, মাস্টারদা সূর্যসেন মৃত্যুর একদিন আগে ১১ জানুয়ারি ১৯৩৪ সালে নিজের এক বন্ধুকে চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘মৃত্যু আমার দরজায় কড়া নাড়ছে। আমি মৃত্যুকে নিজের পরম মিত্র হিসেবে আপন করে নেব। এই সৌভাগ্যবান, পবিত্র ও নির্ধারিত মুহুর্তে আমি আপনাদের সবার জন্য কী রেখে যাব? কেবল একটি জিনিস – আমার স্বপ্ন, আমার সোনার স্বপ্ন, স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন। প্রিয় বন্ধুরা, এগিয়ে যান এবং কখনই পিছপা হবেন না। জেগে উঠুন এবং কখনও হতাশ হবেন না। অবশ্যই সফল হবে।”

Avatar
Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর