পড়ে রয়েছে হাজার হাজার সাইকেল! নেওয়ার নেই কেউই! ২১ লক্ষ টাকায় নিলাম করল প্রশাসন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: করোনার মত ভয়াবহ অদৃশ্য মারণ ভাইরাসের ফলে জর্জরিত হয়েছে গোটা বিশ্ব। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশেও। এমনকি, একটা সময়ে অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়ে যায় যে, করোনার মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে জারি করা হয় লকডাউনেরও। এমতাবস্থায়, রোজগারের আশায় বাড়ি থেকে দূরদূরান্তে থাকা হাজার হাজার শ্রমিককে ঘরে ফিরতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার কয়েকশ কিলোমিটার পথ সাইকেলেই পাড়ি দিয়ে কোনোমতে পৌঁছে যান বাড়ি। কিন্তু, সেই সাইকেলগুলিই আজ সময়ের ফেরে কার্যত হয়ে গিয়েছে পরিত্যক্ত। একটা সময়ে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল থেকে আসা উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের শ্রমিকদের যাতায়াতের মাধ্যম হয়ে ওঠে সাইকেল। কিন্তু, সেগুলির আর খোঁজ নেননি কেউই। এমতাবস্থায়, প্রায় ৫,৪০০ টি সাইকেল জেলা প্রশাসন এবার ২১.২০ লক্ষ টাকায় নিলাম করছে। জানা গিয়েছে, সেগুলি কেনার জন্য ইতিমধ্যেই অনেক ঠিকাদার উপস্থিত হয়েছেন।

মূলত, করোনা মহামারীর সময়ে ভিনরাজ্যে অনাহারে থাকা শ্রমিকদের জেদ তাঁদের বাড়ি ফেরার পথে সদর্থক ভূমিকা পালন করে। এমনকি, শ্রমিকদের জেদের কাছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারকেও মাথা নত করতে হয়। একটা সময়ে শ্রমিকদের বাড়ি পাঠাতে বাসের ব্যবস্থাও করা হয়। এমতাবস্থায়, সাহারানপুরের পিলখানির রাধা সৎসঙ্গ ভবনে কর্মীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। যেখান থেকে তাঁদের বাসে করে বাড়ির পথে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক সেখানে সাইকেল ছেড়ে বাড়ি ফেরার টোকেন নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। যার মধ্যে ১৪,৬০০ জন শ্রমিক তাঁদের সাইকেল নিয়েছিলেন। কিন্তু ৫,৪০০ জন শ্রমজীবী ​​তাঁদের সাইকেল নিতে আর আসেননি। এভাবেই, দু’বছর অপেক্ষার পর প্রশাসন এবার ওই বিপুল সংখ্যক সাইকেলগুলি প্রায় ২১.২০ লক্ষ টাকায় নিলাম করতে চলেছে।

MIGRANTLABOURS

এই প্রসঙ্গে সদর তহসিলদার নিতিন রাজপুত বলেছেন যে, করোনার সময়ে শ্রমিকদের বাসে করে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁরা এখানেই তাঁদের সাইকেল রেখে যান। প্রায় ১১ হাজার সাইকেল ছিল সেখানে। যার মধ্যে ৫,৪০০ জন শ্রমিক সাইকেল নিতে আসেননি। যেকারণে সাইকেলগুলিকে দাবিহীন ঘোষণা করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষিত করা সাইকেলগুলি এখন ২১ লক্ষ টাকায় নিলাম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর