৫০ বছর বয়সে মাধ্যমিক পাশ! প্রথম প্রচেষ্টাতেই পরীক্ষায় সাফল্য পেলেন পুরসভার ঝাড়ুদার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: পড়াশোনা করে সাফল্য অর্জনের জন্য দরকার শুধু জেদ এবং পরিশ্রমের। পাশাপাশি, যে কোনো বয়সেই শিক্ষার সঠিক চর্চার মাধ্যমে পার করে ফেলা যায় একের পর এক গন্ডী। সম্প্রতি, যা করে দেখিয়েছেন BMC (Brihanmumbai Municipal Corporation)-র একজন ঝাড়ুদার। যিনি ৫০ বছর বয়সেই কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার জেরে সাফল্যের সাথে পাশ করলেন দশম শ্রেণির পরীক্ষা। পাশাপাশি, তিনি আরও একবার প্রমাণ করলেন যে, সঠিক ইচ্ছে থাকলেই সমস্ত কিছু হাসিল করা সম্ভব।

   

জানা গিয়েছে যে, একদম প্রথম প্রচেষ্টাতেই তিনি মহারাষ্ট্রের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, Brihanmumbai Municipal Corporation বা BMC দেশের সবচেয়ে ধনী মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন হিসেবে বিবেচিত হয়। ইতিমধ্যেই BMC-র বিভিন্ন বিভাগে হাজার হাজার কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। সেখানেই ৫০ বছর বয়সী কুঞ্চিকোরভে মাশান্না রামাপ্পা ঝাড়ুদারের কাজ করেন। বিগত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই কাজ করে আসছেন। জানা গিয়েছে, রামাপ্পা প্ৰতিদিন তাঁর কাজ শেষ করে সন্ধ্যে ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত স্কুলে যেতেন।

তিন বছরের প্রস্তুতি:
মূলত, রামাপ্পা BMC-র স্যানিটেশন বিভাগের বি ওয়ার্ডে কাজ করেন। তিন বছর আগে তিনি ধারাভির ইউনিভার্সাল নাইট স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে ফের পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। রামাপ্পা তাঁর ডিউটি ​​থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিদিন পড়াশোনা করতেন। পাশাপাশি, এই কাজে পরিবার ও সন্তানদের পাশাপাশি তাঁর সহকর্মীরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম প্রচেষ্টায় পাশ:
রামাপ্পা ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করলেও তিনি পড়াশোনা করতে চাইতেন। কিন্তু, তেমন সুযোগ পাচ্ছিলেন না। যদিও, তিনি তা পূরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যান। ফলস্বরূপ, ৫০ বছর বয়সে তিনি তাঁর প্রথম প্রচেষ্টায় ৫৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তবে, শুধু এখানেই শেষ নয়, বরং রামাপ্পা আরও পড়াশোনা করতে চান। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, “আমি প্রতিদিন ৩ ঘন্টা ধরে পড়াশোনা করতাম। আমার সন্তানেরা স্নাতক পাশ করেছে। তারা আমাকে সাহায্য করত। আমি এবার দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে চাই।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, রামাপ্পা এই পরীক্ষায় ৫০০-র মধ্যে ২৮৭ পেয়েছেন। যার মধ্যে মারাঠিতে পেয়েছেন ৫৪, হিন্দিতে ৫৭, ইংরেজিতে ৫৪, গণিতে ৫২, সাইন্স এন্ড টেকনোলজিতে ৬৩ এবং সোশ্যাল সাইন্স-এ পেয়েছেন ৫৯। এদিকে স্বাভাবিকভাবেই, তাঁর এই বিরাট কৃতিত্বে খুশি হয়েছেন পরিবারের সদস্যরাও।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর