PUBG না খেলতে দেওয়ায় মা’কে খুন করা ছেলে বলল ‘তিন বছরই জেলে থাকব, তারপর বড় নেতা হব”

বাংলা হান্ট ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতে ১৬ বছরের নাবালকের হাতে তার মায়ের খুনের ঘটনায় এবার নাটকীয় মোড় সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, এবার এই মামলায় একজন তৃতীয় আসামির “এন্ট্রি” হয়েছে, যার কারণে পুরো হত্যাকাণ্ডের একটি রূপরেখাও তৈরি করা গেছে। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই ওই নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে।

মূলত, ওই অভিযুক্ত নাবালক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, “মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসত প্রপার্টি ডিলারের আঙ্কল। যা দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। আমি একদিন বাবার কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ করি, তারপরে বাবা এবং মায়ের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এরপর মা আমাকে প্রচুর মারে। আর তাই আমি রেগে যাই।” পাশাপাশি, সে আরও জানায়, ‘থানায় গিয়েও বাবা আমাকে কিছু বলেনি।”

বর্তমান প্রতিবেদনে অভিযুক্ত শিশুটির সাথে তদন্তকারী টিমের জিজ্ঞাসাবাদের কথোপকথন বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপিত করা হল।
প্রশ্ন- তুমি তোমার মাকে মেরে ভয় পাওনি?
উত্তর- না, ভয় পেলে গুলি করতাম কেন?
প্রশ্ন- বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও?
উত্তর- আমি রাজনীতিবিদ হতে চাই।
প্রশ্ন- তোমার কি গার্লফ্রেন্ড আছে?
উত্তর- হ্যাঁ, আমার ৪ জন বান্ধবী আছে (হেসে উত্তর দিয়ে)
প্রশ্ন- তুমি কি খেতে পছন্দ কর?
উত্তর- আমি ডিমের কারি খেতে পছন্দ করি এবং আমি সংশোধনাগারেও এটাই অর্ডার করি।
প্রশ্ন- তুমি কি ফোন চালাতে পছন্দ কর?
উত্তর- টুকটাক পছন্দ করি।
প্রশ্ন- তুমি জেলে যেতে ভয় পাওনা?
উত্তর- না, শুধু ৩ বছরই তো থাকতে হবে।
প্রশ্ন- বাড়িতে কারা আসতেন?
উত্তর- ইলেকট্রিশিয়ান আঙ্কল এবং প্রপার্টি ডিলারের আঙ্কল বাড়িতে আসত, তবে, আমার তা ভালো লাগত না।
প্রশ্ন- তুমি কি তোমার বাবাকে এ বিষয়ে কিছু বলেছিলে?
উত্তর- হ্যাঁ বলেছিলাম, তখন বাবা আর মায়ের মধ্যে অনেক ঝগড়া হয়েছিল। মা আমাকে মেরেও ছিল।
প্রশ্ন- তখন তুমি কি করলে?
উত্তর- একদিন আমি ফোনে মা এবং আঙ্কলের মধ্যে কথোপকথন শুনেছিলাম, সেখানে তারা খুব ব্যক্তিগত কথা বলছিল।
প্রশ্ন- তোমার কি কোনো ফোন ছিল?
উত্তর- না, আমার ফোন মা নিয়ে নিয়েছিল। আমি মাঝে মাঝে ফোন নিয়ে রেকর্ড করা মায়ের কথাবার্তা শুনে বাবাকে জানাতাম।
প্রশ্ন- বাবা কি বলতেন?
উত্তর- বাবা বলতেন এইসব দেখে যদি তোমার রাগ হয় তাহলে তোমার মনে যা আসছে তুমি তাই কর।
প্রশ্ন- পিস্তল সম্পর্কে তথ্য কে দিয়েছে?
উত্তর- বাবা আমার সামনে পিস্তল পরিষ্কার করত এবং পিস্তলটি কোথায় রাখা আছে তা আমাকে বলত।
প্রশ্ন- তারপর কি হল?
উত্তর- একদিন প্রপার্টি ডিলার আঙ্কল বাড়িতে রাতের খাবার খেতে এসেছিল, তারপর সে থেকেও গেল। সেদিন বাবা এবং মায়ের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এমনকি, মা আমাকে খাবার না দিয়ে মারধর করে।
প্রশ্ন- বাবা তোমাকে কিছু বলেন?
উত্তর- বাবা বলল, তুমি যা বোঝো তাই করো, আমি কিছুই করতে পারি না, এখানে আমি বাধ্য। কিন্তু তুমি নয়।
প্রশ্ন- কেউ কখনো বাইরে গেছিলেন?
উত্তর- একবার মা বাইরে গিয়েছিল, তারপর আঙ্কল বাড়িতে এসেছিল। তখন মাও দু’দিনের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল।
প্রশ্ন- কেন?
উত্তর- বাবা, আমার কথা জানার পর আমাদের দিদার কাছে পাঠিয়েছিলেন। তারপর মা চলে যাওয়ার পর বাবা পুরো ব্যাপারটা জানতে পারে।
প্রশ্ন- তারপর বাবা রেগে গেলেন?
উত্তর- মায়ের সাথে এত ঝগড়া হয়েছিল যে মা ঘরের সমস্ত কাঁচ ভেঙে ফেলেছিল। শুধু তাই নয়, মা আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাতও করে।
প্রশ্ন- আঙ্কল যখন আসতেন, তখন তুমি ও তোমার বোন কোথায় থাকতে?
উত্তর- আমরা অন্য ঘরে থাকতাম। মা আর আঙ্কল অন্য ঘরে থাকত। আমার কাছে ফোন না থাকায় বাইরে গিয়ে ফোন করে বাবাকে জানাতাম।
প্রশ্ন- বাবা তোমাকে কখনো বকাঝকা করেছেন?
উত্তর- বাবা আমাকে সব কিছুতে সাহায্য করে এবং বলে কোনো কিছু করতে গিয়ে ভয় পাবেনা, আমি তোমার সাথেই আছি।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর