ররীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে অশ্লীলতা করার পর রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হল মামলা

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ  বইয়ের নাম ‘অ্যান্ড স্টেলা টার্নস আ মম’ (And Stells Turns A Mom)। সম্প্রতি, তার বই প্রকাশিত হয়েছে। নিজেকে ‘বিশ্যোকোবি’বলে দাবি করে থাকেন তিনি। সে আর কেউ না। রোদ্দুর রায়- যিনি রবীন্দ্র সঙ্গীতকে কলুষিত করেছে। তার নামে  বেলেঘাটা থানায় ডায়েরি করেছে  শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ।

সম্প্রতি, রবীন্দ্রভারতীর বসন্ত উৎসবে পিঠে রবীন্দ্র সংগীতের অশ্লীল প্যারোডি লিখে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন কয়েকজন তরুণী। গোটা বাংলায় যেন ঝড় উঠে গিয়েছে, আর সেই ঝড় তোলার নেপথ্য কারিগর যিনি, সেই রোদ্দূর রায়ের নামে অবশেষে দায়ের হল মামলা।

hqdefault 1 1

 

ওই সংগঠনের দাবি, রবীন্দ্রভারতী কাণ্ডের পর সরকারের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা উচিত ছিল। কিন্তু তা যেহেতু করা হয়নি, তাই ওই সংগঠন এগিয়ে এসে মামলা দায়ের করল। তাঁদের অভিযোগ, ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রবীন্দ্র সংগীতকে অশ্লীল মোড়কে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করছেন রোদ্দূর রায়। আর তাতে আসক্ত হয়ে সেই ‘অশ্লীল’ শব্দ ব্যবহার করেই প্রকাশ্য রবীন্দ্র সংগীত গাইছেন, পিঠে লিখছে তরুণী-তরুণীদের একাংশ। যা আসলে সমাজকে কলুষিত করছে বলেই অভিযোগ।

গান তিনি বহুদিন ধরেই গাইছেন। কবিগুরুর গানে গালমন্দ জুড়েই চলছে তাঁর গান! কখনও আবার স্বরচিত গান তিনি শোনাচ্ছেন। গোগ্রাসে গিলছেন নেটিজেন! কিন্তু কিছু দিন আগেই সেই নেটপাড়ার চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে রোদ্দূর রায়ের গান সোজা ঢুকে পড়েছিল শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। কবিগুরুর শান্তিনিকেতন কী ভাবে তাঁরই গান বিকৃত করে গাওয়া হয়! প্রশ্ন উঠেছিল। বিস্তর বিতর্ক দানা বেঁধেছিল সে সময়ে।

আর এ বার রোদ্দূরের গান ঢুকে পড়েছিল রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায়। বসন্ত উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয় গমগম করে উঠেছিল ‘ চাঁদ উঠেছিল গগনে!’ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আবার নিজেদের পিঠেই রং দিয়ে লিখেছিল, রোদ্দুর রায়ের সেই ‘বিকৃত’ গানের লাইন। বিস্তর বিতর্ক হল। ক্ষমাও চেয়ে নেন সেই ছাত্র-ছাত্রীরা। জল এতদূর গড়ায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগও করেন। পরে অবশ্য তা তিনি ফিরিয়ে নিয়েছেন।

কিন্তু যাঁর গানকে ঘিরে দানা বাঁধল এত বিতর্ক সেই রোদ্দূর রায় ব্যক্তিটি কে? কতটাই বা চিনি তাঁকে আমরা? নেটপাড়ার তিনি পরিচিত মুখ। এমন ভাবে ভিডিয়োর ইন্ট্রো শুরু করেন যেন মনে হয়, নেটপাড়ার সবই তাঁর হাতের নাগালে। ফেসবুকে ও ইউটিউবে উদ্ভট সব ভিডিয়ো তিনি বানিয়ে থাকেন। কখনও রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে কাটাছেঁড়া তো কখনও আবার অন্য কারও। সাম্প্রতিক অতীতের নানান সমস্যা যেমন CAA, NRC এমন নানান বিষয় নিয়েও বাণী শোনাতে কুণ্ঠা বোধ করেন না তিনি। আবার সেসব গান বা বক্তৃতা বা রকের খোশমেজাজি আড্ডার সবই তিনি ছেড়ে দেন ফেসবুক এবং ইউটিউবে।

ভাইরাল। ব্যাপক ভাইরাল তিনি। বিশেষ করে তার ‘যেতে যেতে পথে, পূর্ণিমা রাতে, চাঁদ উঠেছিল’ গানের প্যারোডি ভার্সনটা এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে বলার বাইরে! ইদানিং কালে এ পার বাংলা এবং ওপার বাংলাজুড়ে তোলপাড় করা এক নাম– রোদ্দূর রায়। ইন্টারনেট সেনসেশন।

রোদ্দুর হলেন কলকাতার লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের পরিচিত একটি মুখ। ‘মোক্সা গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট’, ‘মোকসা রেডিয়ো’ ইত্যাদির সঙ্গেও জড়িত তিনি। বিকৃত করে রবীন্দ্র সঙ্গীত গান। কবিতাও লেখেন। তবে তাঁর কবিতা বা কবিতার বইয়ের নামগুলো শুনলে একটু ভ্রু কুঞ্চিত হয় বৈকি! আর সেই সব কবিতার বইয়ের নাম নিতে গিয়ে প্রথমেই মাথায় আসবে রোদ্দুরের ‘চরম ক্যাওড়’-র কথা, যেখানে তিনি ‘ক্যালানের মত ঠ্যাং তুলে’, ‘গান্ডুরা কেন গাঁজা খায়’ ইত্যাদি কবিতা লিখেছেন।

 

সম্পর্কিত খবর