কেন্দ্রীয় দলের চাপ রাজ্যের উপরঃ হাসপাতালের ত্রুটি দূর করতে পদক্ষেপ মুখ্যসচিবের

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ শুরুর দিকে মিলমিশ থাকলেও, করোনা (COVID-19) বিষয়ে ধীরে ধীরে মতপার্থ্যক্য ঘটছে কেন্দ্র এবং রাজ্যের (West bengal) মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গে করোনা চিকিৎসায় গাফিলতি হচ্ছে এই অভিযোগে কেন্দ্রের টিম রাজ্যে আসলেও, তাঁদের রাজ্য পরিদর্শনে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পরে অবশ্য কেন্দ্রের পেশ করা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারের ভিত্তিতে, তাঁদের রাজ্য় ঘুরে দেখতে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আন্তঃমন্ত্রক টিম চিঠি পাঠাল রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে।

   

এই চিঠি পেয়ে চটজলদি রাজ্যের করোনা চিকিৎসারত হাসপাতালগুলোকে পরিকাঠামোগত দিক থেকে উন্নত করতে এবং দ্রুত রোগীর নমুনা পরীক্ষা করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। রাজ্যের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ও সুপারদের সঙ্গে তিনি বৈঠক শুরু করেন। এবং ১১ দফা রিপোর্ট পেশ করেন। যেখানে পরিস্কার করে বেশ কয়েকটি বিষয় তিনি উল্লেখ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি বাঙ্গুর হাসপাতালের ঘটমান দূর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

মুখ্যসচিবের গৃহিত ওই ১১ দফা নির্দেশে বলা আছে-

১) হাসপাতালগুলোকে সর্বদা জীবাণু মুক্ত রাখতে হবে।

২) মেডিকেল কলেজগুলোতে নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের পরিদর্শনে যেতে হবে।

৩) চিকিৎসকদের বসবার জায়গা বা পোশাক বদলাবার জায়গাও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৪) করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে দেখভালের জন্য মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যালদের দায়িত্ব নিতে হবে।

৫) বিশেষত সরকারি হাওপাতালে কোন রোগীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। নাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

file pic

৬) সরকারী হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজ থেকে কোন রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।

৭) চিকিৎসা ক্ষেত্রে জরুরী বিভাগ বা ওপিডি বিভাগের সকল চিকিৎসককে পিপিই পড়তে হবে।

৮) কোন রোগীকে হাসপাতাল স্থানান্তকরণের ক্ষেত্রে তাঁদের সঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দিতে হবে।

৯) বিশেক করে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালকে সমস্ত রকম উন্নত পরিকাঠামো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১০) রোগীর মৃত্যু হলে তৎক্ষণাৎ তাঁকে মরদেহ ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

১১) যে কোন রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ১২ ঘণ্টার মধ্যে টেস্টের ফলাফল দিতে হবে।

করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট অনেক দেরীতে আসছে এই নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কলকাতায় আসা আন্তঃমন্ত্রক টিমের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র-এর লেখা চিঠি সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরই, রাজ্য নড়েচড়ে বসে বলেও অভিযোগ উঠছে। তবে রাজ্যে করোনা মৃতের সংখ্যা বিষয়েও অপূর্ব চন্দ্রকে দেওয়া ব্যাখাও স্পষ্ট নয় বলেও অভিযোগ উঠছে। তবে রাজ্যের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এখনও অবধি রাজ্যে করোনার প্রভাবে ৫৭ জন মারা গেলেও, তাঁর মধ্যে ১৮ জন সরাসরি করোনায় মারা গেছেন। এবং বাকি ৩৯ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ থাকলেও, তারা অন্যান্য রোগের কারণে মারা গিয়েছেন।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর