পৃথিবীর সবথেকে বড় রামভক্ত এই জনজাতি, পুরো শরীরে লিখে রাখে ভগবান শ্রী রামের নাম, কখনো যান না মন্দির

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বৈচিত্রের দেশ ভারতে (India) বিভিন্ন ধর্মের, বর্ণের মানুষজন বসবাস করেন। মানুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ করা হয় না এখানে। ভারতে বসবাসকারী সমস্ত মানুষই ভারত মাতার সন্তান। তবে এই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য দেশে এমন এক জাতি বসবাস করেন, যারা কোন মন্দির মসজিদে যান না। কিন্তু তাঁদের সারা দেহে লেখা রয়েছে রাম (Ram) নাম।

এমন এক সম্প্রদায়ের মানুষ আছে, যাদের সর্বাঙ্গে লেখা রাম নাম
ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) এই সম্প্রদায়ের মানুষজন ভগবান রামের নামে পোশাক পরিধান করেন। সর্ব অঙ্গে রাম নাম লিখে রাখেন। এমনকি রাম নামের ট্যটুও করেন তারা। কিন্তু ভগবান রামের প্রতি এত ভক্তি থাকলেও, তারা কিন্তু কখনই কোন মন্দিরে গিয়ে ভগবানের উপাসনা করনে না।

কোনোরকম কোন মূর্তি পূজা বা মন্দিরে প্রবেশ করেন না
এই সম্প্রদায়ের মানুষজন বিশ্বাস করেন প্রতিটি মানুষ,গাছপালা এবং প্রাণীদের মধ্যেই ঈশ্বরের বাস। রামচরিত মনসকে তারা পূজা করেন। রাম দেবতার নাম সর্বত্র ধ্বনিত হলেও, তারা কখনও কোন মন্দিরে গিয়ে প্রভুর সেবা করনে না। এমনকি কোন মূর্তি পূজাও করেন এই মানুষজন। তবে অযোধ্যার রাম মন্দিরের সাথে কিন্তু তাঁদের কোনো সম্পর্কই নেই।

পরিহিত জামা কাপড়েও লেখা থাকে রাম নাম
প্রত্যেকের বাড়িতে উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা হয়েছে রাম নাম। এক ব্যক্তির সাথে অপর ব্যক্তির সাক্ষাতের শুরুতেই তারা রাম নাম মুখে আনেন। টুপি থেকে শুরু করে কুর্তা এমনকি তাঁদের গামছাতেও লেখা আছে রাম নাম। এই সম্প্রদায়ের মানুষজন রামনামি ভজন মেলায় মিলিত হয়ে মানুষজনকে দিক্ষা দেওয়ার কাজ করে থাকেন। তাঁদের এই মেলার উদ্দেশ্যই হ’ল নিজ সম্প্রদায়ের মানুষজনের সাথে একত্রিত হওয়া এবং নতুন মানুষকে তাঁদের দীক্ষায় দীক্ষিত করা।

গোঁড়া মনভাবের বশবর্তী হয়ে মন্দিরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছিল তাঁদের
প্রায় ১০০ বছর আগে সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষেরা এই সকল মানুষদের কোন মন্দিরে প্রবেশ করতে দিত না। তাই তারা নিজেদের শরীরটাকেই মন্দির বানিয়ে, সর্বাঙ্গে রাম নাম লিখে রেখেছেন- জানালেন রামনামি সমাজের জাতীয় রাষ্ট্রপতি মেহতারলাল টন্ডন।

শরীরে রাম নামের ট্যটুর ভূমিকা
এই রামনামি সমাজের সকল মানুষ তাঁদের শরীরে রাম নামের ট্যটু করে থাকনে। তবে এই ট্যটুর কিন্তু বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন- যে ব্যকি তাঁর শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে রাম নামের ট্যটু করবে, তাঁকে নখ শিখা রাম নামি বলা হয়। আবার কপালে দুটো রাম নামের ট্যটু করলে কপালে শিরোমী বলা হয়। সমস্ত কপালে রাম নাম লিখলে তাঁকে সর্বং রামনামি বলা হয়।

বর্তমান যুবসম্প্রদায় আর সর্বাঙ্গে রাম নামের ট্যটু করে না
ছত্তিশগড়ের চারটি জেলায় রামনামিদের দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে সংস্কৃতির ঐতিহ্য থাকলেও, যুব সম্প্রদায় এখন আর সমস্ত অঙ্গে রাম নামের ট্যটু করে না। তবে তারা রাম নাম লেখা পোশাক পড়ে, দেহের কোন অংশে বা কপালে রাম নাম লেখেন।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর