বর্ষা পড়তে না পড়তেই ঝুঁকি বেড়েছে পূর্ব বর্ধমানে, দামোদর নদীতে বেড়েছে জল, গ্রামবাসীদের ভরসা বাঁশের সেতুই

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বর্ষা পড়তে না পড়তেই বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের (Burdwan)। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর (Jamalpur) ব্লক ও বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে দামোদর নদ। জামালপুর ব্লকের সঙ্গে বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের যোগাযোগের দুটি সেতু আছে। সদর ঘাটে কৃষক সেতু এবং জামালপুরের হরেকৃষ্ণ সেতু।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার শুরু থেকেই বিপদের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করে চলেছে পূর্ব বর্ধমানের কৃষক সেতু ও হরেকৃষ্ণ সেতুর মধ্যবর্তী এলাকায় বাঁশের অস্থায়ী সেতু দিয়ে। দামোদরের উচ্চ অববাহিকায় প্রবল বৃষ্টির ফলে দ্রুত জল বাড়তে শুরু করেছে। তাতেই বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বর্ধমান ২ ও জামালপুরের মাঝের বাঁশের সেতুতে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের অস্থায়ী সেতু দিয়েই পারাপার করতে হচ্ছে দু’পারের মানুষজনকে। যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

সোমবার রাত থেকে দামোদরে জল বাড়তে শুরু করেছে। জল বাড়তে বাড়তে অস্থায়ী বাঁশের সেতু প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। চরের খানিকটা ডুবে যাওয়ার পরেও হাঁটুর বেশি জলে ঝুঁকি নিয়ে অনেকে মোটর বাইক, সাইকেল, ভ্যান প্রভৃতি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন। বর্ষার সময় অস্থায়ী বাঁশের সেতু খুলে নিলে দুর্ভোগ বেড়ে যায় পারাপারে। রাত ন’টার পরে ফেরি চলে না।

অসুবিধায় পড়তে হয় নদী পাড়ের মানুষজনকে। নৌকার মাঝি সুশান্ত সিং বলেন, “জল বাড়তেই নৌকা চালানো শুরু করেছি তা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের নড়বড়ে সেতু দিয়ে অনেকে জল পেরিয়ে যাচ্ছেন। বারন করলেও তাঁরা শুনছেন না। তাই যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই এলাকার মানুষের স্থায়ী সেতুর দাবি অনেক দিনের।”

জামালপুর ব্লকের বাসিন্দা শিবসাধন মাঝি বলেন, জরুরি কাজের জন্য শম্ভুপুর ঘাট পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করতে হয়। এতে এলাকার মানুষজন খানিকটা হলেও উপকৃত হয়। এক দিকে যেমন রাস্তার দূরত্ব কমে অন্য দিকে তেমনি সহজে বর্ধমানে পৌঁছনো যায়।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লক ও বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে দামোদর নদ। জামালপুর ব্লকের সঙ্গে বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের যোগাযোগের দুটি সেতু আছে। সদর ঘাটে কৃষক সেতু এবং জামালপুরের হরেকৃষ্ণ সেতু। এই দুই সেতুর দূরত্ব প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার। তার মধ্যবর্তী জায়গায় রয়েছে শম্ভুপুর নতু, হরিপুর, জামুদহ, চক্ষণজাদী, বোরো, বালাগড়, মোহনপুর প্রভৃতি গ্রাম। এইসব গ্রামের বাসিন্দাদের তিন কিলোমিটার দূরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠতে হলে দামোদর নদ পার হতে হয়।

নদী পার হয়ে আবার পাঁচ কিলোমিটার গেলে শক্তিগড় স্টেশন। তাই বেশ কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সারা বছর দামোদরের বাঁশের সেতুর উপরে ভরসা করতে হয়। সড়কপথে হোক বা রেলপথে, বর্ধমান কিংবা কলকাতা সহজে পৌঁছনোর জন্য এই সেতুর উপরে ভরসা করেন বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষজন। বড়শুল, জামালপুর ব্লক ও রায়না ব্লক এলাকার বাসিন্দাদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন অবশ্য দমোদর পেরিয়ে অথবা ঘুর পথে চিকিৎসার জন্য যেতে হয় ।

সম্পর্কিত খবর