মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বড় সাফল্য! টেসলাতে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ পেলেন বাংলার অপরূপ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কঠোর পরিশ্রম এবং নিজের মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগালেই যেকোনো বয়সেই সাফল্যের স্বাদ পাওয়া যায়। আর এই আপ্তবাক্যকেই ফের একবার প্রমাণ করে দেখালেন দুর্গাপুরের (Durgapur) জুম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অপরূপ রায়। শুধু তাই নয়, মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তিনি একের পর এক নজিরবিহীন কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। আপাতত অপরূপ টেসলা (Tesla)-র ফুড প্রিন্টিং প্রোজেক্টে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করছেন বলেও জানা গিয়েছে।

এছাড়াও, এই পড়ুয়া NASA, ESA এবং JAXA-র মত মহাকাশ গবেষণা সংস্থা থেকে তাদের কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য শংসাপত্রও পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুসারে জানা গিয়েছে যে, অপরূপ ইতিমধ্যেই “Development of Cow Dung using Herbal Ingredients based Mosquito Repellent” শীর্ষক একটি রিসার্চ প্রপোজাল লিখেছেন।

তাঁর মতে, বাজারে মশা দূরীকরণের জন্য প্রাপ্ত জিনিসপত্রগুলি রাসায়নিক পদার্থে ভরা থাকে। যার ফলে একাধিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যে কারণে অপরূপ নিজেই এটির দূরীকরণে একটি ভেষজ সংস্করণ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি দু’টি বইও প্রকাশ করেছেন। সেগুলি হল, “Problems in General Chemistry” এবং “Master ICSE Chemistry Semester”।

পাশাপাশি, তাঁর তিনটি গবেষণাপত্রও রয়েছে। সেগুলি হল, “ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ”, “ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইন কেমিক্যাল সায়েন্সেস”, এবং “জার্নাল অফ ফিজিক্স অ্যান্ড কেমিস্ট্রি অফ মেটিরিয়ালস”। তিনি যখন দশম শ্রেণিতে পাঠরত ছিলেন তখনই এগুলি প্রকাশিত হয়।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ২০২০ সালে ISRO-র সাইবারস্পেস প্রতিযোগিতায় অপরূপ সর্বভারতীয় স্তরে একাদশ স্থান অর্জন করেন। পাশাপাশি, বেদান্তু মাস্টার স্কলারশিপ টেস্ট (VSAT)-এ তিনি ছিলেন ৭০৬ তম স্থানে। এছাড়াও অপরূপ বাড়িতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য জলে লবণ দ্রবীভূত করা সহ বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। যার জন্য তিনি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-র বিজ্ঞানীদের সাহায্য নেন বলে জানা গিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “যখন লকডাউন ছিল, তখন কাউকে বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। তাই আমি বাড়িতে আমার সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বাধ্য হয়েছিলাম।” তিনি আরও জানান, এমন কিছু অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে যা বাড়িতে করা যায় না। সেজন্য তিনি এনআইটি দুর্গাপুরের রসায়ন বিভাগের প্রধানকে চিঠি লিখেছিলেন। এমতাবস্থায়, অপরূপ এখন এনআইটি দুর্গাপুরের একটি ল্যাবে গবেষণাও করছেন।

WhatsApp Image 2022 12 02 at 7.57.22 PM 1

তবে, এখানেই শেষ নয় ন্যাশনাল সাইন্স অলিম্পিয়াডে অপরূপের র‍্যাঙ্ক ছিল ১। পাশাপাশি, IIT-JEE পরীক্ষার্থীদের জন্য বাইজু-র পক্ষ থেকে নেওয়া ন্যাশনাল অ্যাপ্টিটিউড টেস্টে তিনি ৪৮২ তম স্থান অধিকার করেন। এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের এই তরুণ বিজ্ঞানী দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। আগামীদিনে তিনি JEE-র মাধ্যমে আইআইটি বোম্বেতে যুক্ত হতে চান বলেও জানা গিয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর