লকডাউনে ওড়িশার প্রায় ১৫ টি গ্রামকে বিনামূল্যে সবজি দিচ্ছেন এই মহিলা

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ওড়িশার (Odisha) ভদ্রক জেলায় বসবাসকারী ছায়ারানী সাহু লকডাউনের কারণে আশেপাশের কমপক্ষে ১৫ টি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করছেন। করোনা ভাইরাসের (COVID-19) কারণে লকডাউনের মধ্যেও এই ৫৭ বছর বয়সী কৃষক মহিলা দরিদ্র মানুষের সেবা করে চলেছেন।

   

ভদ্রক জেলার বাসুদেবপুর ব্লকের আওতাধীন কুরুদা গ্রাম ছাড়াও ছায়ারানী ও তার পরিবার ভৈরবপুর, আলাবাগা, লুঙ্গা, ব্রাহ্মণীগাঁও, বিনায়কপুর এমনকি বাসুদেবপুরের কয়েকটি ওয়ার্ডে এবং অন্যান্য গ্রামেও ৫০ কুইন্টালের উপরে তাজা শাকসবজি বিতরণ করেছেন। ২৩ শে এপ্রিল, ভাদ্রক জেলায় ৬০ ঘণ্টার জন্য সম্পূর্ণ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলে ছায়ারানী ও তার পরিবারের প্রায় ২৫ কুইন্টালের উপরে শাকসবজি নিকটবর্তী গ্রামগুলিতে বিতরণ করেছিল।

তিনি জানান, “আমি লকডাউন করার আগেও এটি করছিলাম। যখনই লোকেরা প্রয়োজন হয়, আমি তাদের শাকসব্জি এবং দুধ বিতরণ করে সহায়তা করি। লোকেরা বাড়িতে শাকসবজি সংগ্রহ করতে আসত। পাশাপাশি আমি বিভিন্ন যজ্ঞের জন্য ১-২ কেজি ঘি এবং প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে দুধ বিতরণ করতাম’।

চার সন্তান এবং স্বামী সর্বেশ্বর সাহুকে নিয়ে তাঁর পরিবার। খামারে সবজি চাষ এবং ২০ টি গরু লালন পালন করেন দুগ্ধচাষের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। সাধারণ সময়ে তারা প্রতি বছর সবজি চাষ করে বছরে ৩ লক্ষেরেও বেশি টাকা জমাতে পারতেন। কিন্তু এই লকডাউনের সময়ে তা ৫০ হাজারের বেশি হবে না জেনেই, তারা সিদ্ধান্ত নেনে সমস্ত সবজি দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিলি করে দেবেন। এই কাজে তাঁদের সঙ্গে একদল স্বেচ্ছা সেবকও যুক্ত আছে। তারা সবজি প্যাকেট করে টেম্পো ভাড়া করে এই সংকটের সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজি দিয়ে আসেন।

বড় গ্রাম হলে তিনি তার পরিবার এবং স্বেচ্ছাসেবীদের দলের সাথে সেখানে যান। কিন্তু ছোট গ্রামে গাড়ি পাঠিয়ে দেন তারা। এবং সেখান থেকেই গ্রামবাসিরা তাঁদের প্রয়োজনীয় টমেটো, কুমড়ো, বেগুন, ভেন্ডি, গাজর, বিট, কাঁচা লঙ্কা এমনকি পালংশাক সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, তিনি প্রায় ১২ টি গরু থেকে প্রায় ৩০ লিটার দুধ বিতরণ করেছেন, যা তারা লকডাউন ডিউটিতে গ্রামবাসী এবং পুলিশ কর্মীদেরকে দেয়।


এই মুহুর্তে তাদের নিজস্ব আর্থিক অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও তার স্বামী, দুই পুত্র এবং তাদের স্ত্রীরা তাঁর সাথে এই কাজে তাঁর পাশে রয়েছেন। তিনি স্বীকার করেন যে অভাবী লোকদের খাওয়ানোর জন্য তার প্রয়াসে যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।
তবে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্বের নিয়মাবলী অনুসরণ করা এবং মানুষের বিশাল সমাবেশকে না করেই তিনি এই কাজ করে চলেছেন। তিনি জানান, “আমি একটি মাস্ক ব্যবহার করি এবং সতর্কতা অবলম্বন করি। আমি অন্যকে সাহায্য করার এবং নিজের সম্পর্কে সচেতন থেকে এই কাজ করছি। মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে, তাই আমি খুশি যে কোনও উপায়ে আমি কিছুটা হলেও আটকাতে পারছি’।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর