সাদা খাতা জমা দিয়েই চাকরি পান TMC নেতার স্ত্রী, লক্ষ লক্ষ টাকায় সিট কেনাবেচার অভিযোগ! ভাইরাল লিস্ট

বাংলাহান্ট ডেস্ক : সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া বান্ডিল বান্ডিল নোটের ছবি। দফায় দফায় ইডি অর্পিতার বিভিন্ন জায়গার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি ও বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না। সবার মুখে মুখে এখন শুধু একটাই প্রশ্ন এত টাকা এত সম্পত্তি পেলেন কোথা থেকে অর্পিতা? ইডি সূত্রে খবর জেরার মুখে পড়ে অর্পিতা বলেছেন যে প্রাপ্ত অর্থ তার নয় সবই পার্থ চট্টোপাধ্যায়-র। নিজের কোর্টের বল পার্থর দিকে ঠেলে দিয়ে কি ইঙ্গিত দিতে চাইছে আসলে অর্পিতা? তবে কি এইসব টাকাই চাকরি চুরির টাকা?

এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যখন ব্যস্ত ইডি, ঠিক তখনই নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল আরেকটি তালিকা এবং মুহূর্তে হয়ে গেল ভাইরাল। এই তালিকায় উল্লেখ করা রয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন তৃণমূলের নেতা নেত্রীর নাম এবং তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নাম। সবাই কী আসলেই যোগ্য? নাকি সবই আসলে টাকার খেলা আর ক্ষমতার অপব্যহারের ফল?

এখন শুধু একটাই প্রসঙ্গে সরগরম সারা বাংলা তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতি। ইডির জেরায় এখন নাজেহাল অবস্থা পার্থ অর্পিতার। এত কিছু পরেও পিছু হটেননি চাকরিপ্রার্থীরা, প্রায় ৫০০ দিন অতিক্রান্ত হলেও তারা তাদের আন্দোলন জারি রেখেছে। একটু কান পাতলেই শোনা যায় চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি না পাওয়ায় হতাশার আর্তনাদ।

যখন কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে তখন চাকরিপ্রার্থীদের মুখেও একই প্রশ্ন , “এইসবই কি আসলে চাকরি চুরির টাকা? চাকরিপ্রার্থীদের হকের টাকা? যে তালিকাটি বর্তমানে সোশ্যাল মাধ্যমে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে তা থেকে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই তালিকায় রয়েছে জলপাইগুড়ি অঞ্চলের তৃণমূলের ১২ জন নেতার নাম।

সূত্রের খবর সেই তালিকায় রয়েছে নেতা সুদীপ মল্লিকের নাম। সুদীপ মল্লিক বর্তমানে জলপাইগুড়ির শিক্ষা সেলের একজন নেতা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিয়েই চাকরি পেয়েছেন তার স্ত্রী রুমা মল্লিক। সুদীপ মল্লিকের কারসাজিতে যোগ্যতা না থাকতেও সরকারি চাকরি পেয়েছেন রুমা। ধুপগুড়ির ওয়ার্ড নম্বর প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করেন রুমা ২০১৭ সালে। জলপাইগুড়ির জেনারেল DYFI সম্পাদক নির্মাল্য ভট্টাচার্য বলেন, ” সবই টাকার খেলা। তালিকায় দেখলাম সুদীপ মল্লিকের নাম আছে। শাসকদলের নেতার স্ত্রী রুমা মল্লিক ও তার ছেলেমেয়েরাও চাকরি পেয়েছে তারই কারসাজিতে। সাদা খাতা দিয়েও লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কেনা বেচা হয়েছে সিট।”

TMC leaders wife,BJP,Left Front,Without exam issue,SSC Scam,Indian Rupee,Lakh,Employment

ঘটনা সত্যতা যাচাই করতে সংবাদমধ্যম পৌঁছে যায় উক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রশ্ন করা হয় বিদ্যালয়ের আধিকারিকদের। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয় তারা কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ।এই তালিকা প্রকাশ করার পরই সরব হয়েছে বিজেপি ও বামেরা।

বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মন্তব্য ” সারা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে দুর্নীতি ও চাকরি চুরির ঘটনা। ১০ লাখ ১৫ লাখ ২০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে সরকারি চাকরি। শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নয় এর পিছনে আরো অনেক নেতা-নেত্রী জড়িয়ে রয়েছে।”

অপরদিকে অভিযুক্ত রমা দেবীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি। তার স্বামী তথা শাসক দলের জলপাইগুড়ি অঞ্চলের শিক্ষাসেলের নেতার দাবি, ” যা রটেছে সবই ভুল এবং ভিত্তিহীন, আমার স্ত্রী টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং তারপর ভাইবা দিয়েই চাকরি পেয়েছেন, মিথ্যা রটনা করে তৃণমূলকে বদনাম করার জন্যই এই সব ঘটনা সাজানো হয়েছে। সবই ষড়যন্ত্র।”

আবার অন্যদিকে তৃণমূল নেতা রাজেশ কুমার সিং মন্তব্য করেন, ” ইডি তদন্ত করছে তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে তাই দল মেনে নেবে। দল নিজে স্ট্যান্ডে ঠিকই আছে। আর আমাদেরও পার্টিগত ভাবে স্ট্যান্ড ঠিক আছে। অন্যায়ের সাথে কোন আপোষ হবে না এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর