একুশের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত তৃণমূল, জঙ্গলমহলে মাস্টারস্ট্রোক খেললেন মমতা ব্যানার্জী

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘদিন জেলে কাটিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে  নিজের এলাকায় ফিরেছিলেন ছত্রধর মাহাতো (Chhatradhar Mahato)। তখনই স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল, তিনি ছিলেন না বটে এলাকায়, কিন্তু তিনি এখনও তুরুপের তাস। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এখনও লেগে রয়েছে তাঁর মুখে কথায়। তখন থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, জঙ্গলমহলে ধুয়েমুছে যাওয়া তৃণমূলের ‘ঘোড়া’ হয়ে উঠতে পারেন সেই ছত্রধর মাহাতো। বাস্তবে হলও তাই।

মাওবাদী সন্দেহে দীর্ঘদিন জেলে কাটানো ছত্রধর বৃহস্পতিবার থেকে হলেন তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য। দলের অত্যন্ত আস্থাভাজন নেতারাই যে কমিটিতে আসেন, সেখানেই ছত্রধরকে জায়গা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

dffdf

২০১১ সালে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম যদি তৃণমূল সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করে তাহলে বলতে হয় তত্কালীন সিপিএমের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতেছিল জঙ্গলমহল। কার্যত নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে তৃণমূল জঙ্গলমহলে তাঁদের সংগঠনিক শক্তিকে বাড়িয়ে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল তত্কালীন বাম সরকারকে।

জেল থেকে মুক্তি পেয়ে প্রায় এগারো বছর পর, ফেব্রুয়ারিতে বাড়ি ফিরছিলেন ছত্রধর মাহাতো। ফিরেছিলেন চিরচেনা সেই লালগড়ের মাটিতে। যে লালগড়ে একদিন তাঁর নেতৃত্বের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছিল তৎকালীন শাসক সিপিএম। একদশক পর সেই আন্দোলনের আঁতুড় ঘরে ফিরেই রাজনীতির মূলস্রোতে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি।

সেদিন ছত্রধরকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল আপনার এলাকায় তো বিজেপির উত্থান। কীভাবে সামলাবেন? ছত্রধরের উত্তর ছিল, ‘লোকসভা ভোটে এই এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস মন্দায় পড়েছে, অনেকখানি পিছিয়ে পড়েছে ঠিকই। কিন্তু আজকের উৎসাহ দেখে আমার মনে হয় এই পিছিয়ে থাকা কিছু নয়।’ তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় জঙ্গলমহলে তিনিই ঘাস-ফুল শিবিরের সেনাপতি। তৃণমূলে যোগ না দিয়েও কীভাবে তৃণমূলের অনুষ্ঠানে?

tmc 9
তৃণমূল কংগ্রেস/All India Trinamool Congress

স্পষ্টতই তিনি বলেন, ‘তৃণমূলকে ভালোবেসে অনেকেই আসছেন এই দলে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকে সামনে রেখেই তাঁরা যোগ দিয়েছেন। আমি এখানে বিশেষ অতিথি। আমি এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ নই, আবার কেউ।

আমি আসলে মানুষের প্রতিনিধি।’ জঙ্গলমহলে ধুয়ে-মুছে যাওয়া তৃণমূলের জন্যে সেই ‘মানুষের প্রতিনিধি’কেই নিয়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন পর ফের কী কাজ করবে ছত্রধর ম্যাজিক? উত্তর পেতে সময় লাগবে আর মাত্র কয়েকটা মাস।

সম্পর্কিত খবর