টিকা দিতে আসছে শুনেই পাটক্ষেত, আমবাগানে ছুটল গ্রামবাসীরা! হতবাক স্থানীয় পঞ্চায়েত

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ করোনার এই অতিমারীতে এখন রীতিমতো বিধ্বস্ত বাংলা। শেষ ২৪ ঘন্টাতেও নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মোট সংখ্যাটা পৌঁছালো প্রায় ১৩ লাখের কাছাকাছি। এমতাবস্থায় একমাত্র উপায় হল ভ্যাকসিন। বিভিন্ন গবেষণা জানিয়েছে, একমাত্র ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই করোনার এই মারন প্রভাবকে অনেকটাই কম করা যেতে পারে সারাদেশে। শুধু তাই নয়, এবার প্রাপ্ত বয়স্কদের সাথে সাথে শিশুদেরও ভ্যাকসিনের আওতায় আনার কথা ভাবতে শুরু করেছে সংস্থাগুলি। কিন্তু এরই মধ্যে দেখা গেলো এক চূড়ান্ত অসচেতনতার ছবি। টিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে রয়েছে বিপুল ভয়। আর সেই ভয়েই স্বাস্থ্য দপ্তরে লোক আসছে শুনেই টিকা নেওয়ার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালাতে শুরু করলেন বেশকিছু গ্রামবাসী।

   

ঘটনাটি ঘটেছে হরিহরপাড়ার সুন্দলপুর গ্রামে। গ্রামের মানুষের মধ্যে টিকা এবং করোনাকে নিয়ে এখনও রয়েছে বিপুল ভয় এমনটাই জানতে পেরেছিল প্রশাসন। শুধু তাই নয় এই ভয়ের কারণে জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ থাকা সত্বেও হাসপাতালে যাচ্ছেন না অনেকেই। তাদের ধারণা হাসপাতালে গেলেই হয়তোবা তাদের করোনা পড়বে। আর সেক্ষেত্রে ভয়, শুধু করোনা পরীক্ষা নয়, টিকা গ্রহণ নিয়েও একইরকমভাবে দানা বেঁধেছে মানুষের মনে। সোমবার সকালে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অসমিতা ফেরদৌস-সহ সুন্দলপুর গ্রামে আসে একটি বিশেষ দল। তাদের লক্ষ্য ছিল সচেতনতা প্রচার। কিছুদিন ধরেই তারা শুনতে পাচ্ছিলেন এই গ্রামে বেশকিছু মানুষের মধ্যেই রয়েছে নানা উপসর্গ। তবু পরীক্ষা করাতে চান না তারা। সেই কারণে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি বিশেষ দল এবং পঞ্চায়েত প্রধান মিলে প্রচারে আসেন গ্রামটিতে।

কিন্তু এই দল আসছে শোনামাত্রই ঘরে তালা দিয়ে কেউ আমবাগানে কেউবা পাট খেতে লুকিয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। এমনকি কেউ কেউ পালিয়ে যান পাশের গ্রামেও। সূত্রের খবর অনুযায়ী, টিকা নেওয়ার ভয়ে কাঁটা হয়ে আছে গ্রামের প্রায় ২৫-৩০ টি পরিবার। আর তাদের মধ্যেই দেখা গেল এই ভয়ের ছবি। গ্রামেরই এক বাসিন্দা বাবলু শেখ বলেন, ‘‘শুনছি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলেই করোনা ধরা পড়ছে। সেই ভয়ে আমরা হাসপাতাল যাই না।’’

অন্যদিকে গ্রামের মধ্যে সচেতনতা ফেরাতে অবশ্য বদ্ধপরিকর গ্রাম প্রধান অসমিতা ফেরদৌস। মানুষের এত ভয় দেখে বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তার মতে, মানুষকে সচেতন করার প্রচেষ্টায় তারা সবসময় চালিয়ে যাবেন। একই মত স্বাস্থ্যকর্মীদেরও। একদিকে যখন করোনায় রীতিমতো বিধ্বস্ত গোটা বাংলা। তখনো ভয় কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বেশ কিছু মানুষ। অনেকেই ভাবছেন করোনা হলে হয়তো তাঁকে এক ঘরে করে দেওয়া হবে। কয়েকটি ক্ষেত্রে এমন দৃশ্য যে চোখে পড়েনি তা নয়। আর সেই কারণেই দরকার আরো সচেতনতা প্রচার।

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর