অন্ধকারে মহাকাশে ভারতের মানুষ পাঠানো মিশন, মুখে কুলুপ ISRO-র! জানুন কেন এমন হল

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাকাশে মহাকাশচারী পাঠানোর সাথে সম্পর্কিত ভারতের প্রথম মিশন গগনযান (Gaganyaan Mission) করোনা মহামারীর কারণে কিছুটা পিছিয়ে যায়। এমতাবস্থায়, ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (Indian Space Research Organisation, ISRO) অর্থাৎ ইসরো এখনও এই মিশনের জন্য কোনো সংশোধিত সময়রেখা প্রকাশ করেনি। জানা গিয়েছে, গগনযান মিশনের লক্ষ্য হল তিনজন মহাকাশচারীর একটি ক্রুকে পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে একটি কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া। এই মিশনের পরিকল্পনা ২০০৭ সালে করা হয়েছিল। পাশাপাশি, এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৮ সালে শুরু করা হয়। জানা গিয়েছে, এই মিশনের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এদিকে, প্রথম ক্রু মিশনটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে লঞ্চ করার পরিকল্পনা ছিল। পাশাপাশি চূড়ান্ত উৎক্ষেপণের আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০২১ সালের জুলাই মাসে দু’টি আনক্রুড মিশনের লঞ্চ হওয়ার কথাও ছিল। যদিও, সরকার ওই সময়ে দাবি করতে থাকে যে, করোনার কারণে এই মিশনে কোনো বিলম্ব হবে না। তবে প্রথমে ক্রু মিশনটি ২০২০ থেকে ২০২১-এ এবং তারপরে ২০২২-এর মধ্যে পুনর্নির্ধারিত করা হয়। এমতাবস্থায় এই বছরের সেপ্টেম্বরে, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এই তারিখকে ২০২৩ সালের শেষে এবং ২০২৪ সালের শুরু পর্যন্ত বর্ধিত করে দেন। তবে, দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদন অনুসারে, ISRO এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায় নি।

মহাকাশে রোবট পাঠাবে ISRO: জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় মানববিহীন ফ্লাইটে, ইসরো ব্যোমমিত্র (Vyommitra) নামে একটি রোবট পাঠাবে। যা মানবদেহে পরিবর্তনগুলি পর্যবেক্ষণ করবে। পাশাপাশি, এটি মহাকাশে হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ এবং মহাকাশের অন্যান্য পরিবর্তনও পর্যবেক্ষণ করবে। এই রোবটটি ২০২০ সালে একটি ইভেন্টে ISRO প্রথম প্রদর্শন করেছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গগনযান মিশন দেরিতে চললেও ISRO কিন্তু বেসরকারি স্টার্টআপগুলির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি শ্রীহরিকোটায় ISRO-র লঞ্চপ্যাড থেকে দেশের প্রথম বেসরকারি রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়।

মহাকাশে যাবেন বায়ুসেনার পাইলটেরা: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ২০১৮ সালে ১২ জন বায়ুসেনার পাইলটকে এই ক্রুর অংশ হওয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছিল। বেঙ্গালুরুর ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোস্পেস মেডিসিনে তাঁদের শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৪ জন পাইলটকে পরবর্তী প্রশিক্ষণের জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। চলতি বছরের মে মাসে বেঙ্গালুরুতে একটি মহাকাশচারী প্রশিক্ষণ ফ্যাসিলিটি স্থাপন করা হয়। সেখানে চার মহাকাশচারী থিওরি, শারীরিক সুস্থতা, ফ্লাইট স্যুট প্রশিক্ষণ, মাইক্রোগ্র্যাভিটি সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে পরিচিত হবেন।

862908 gaganyaan rep 1

কি হবে মিশনটিতে: প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, LVM3 রকেট থেকে গগনযান মিশন উৎক্ষেপণ করা হবে। এমতাবস্থায়, মহাকাশে পৌঁছতে সংশ্লিষ্ট ক্রু’র ১৬ মিনিট সময় লাগবে। সেখানে তাঁরা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে তিন দিন ব্যয় করবেন। মহাকাশচারীরা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকবেন বলেও জানা গিয়েছে। ফেরার সময়ে, ক্রু যে ক্যাপসুলটিতে থাকবে সেটি ১২০ কিলোমিটার উচ্চতায় আলাদা হবে। পাশাপাশি, এটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার ৩৬ মিনিটের পরে সমুদ্রে ছিটকে পড়বে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর