কেন এই অভিমান! বাবুল সুপ্রিয়র বিজেপি ছাড়ার পিছনে উঠে এল কিছু কারণ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। ২০১৪ সালে সঙ্গীত জগত থেকে সরাসরি রাজনীতিতে এসেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। পেয়েছিলেন লোকসভার টিকিটও। সেবার গোটা দেশে মোদী ঝড় থাকলেও, বাংলায় তেমন কিছু ছিল না। তবে বাবুল সুপ্রিয়র জনপ্রিয়তা সেবার তাঁকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে গিয়েছিল। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে দুটি আসন পেয়েছিল বিজেপি, একটি দার্জিলিং আরেকটি আসানসোল।

নির্বাচনে জয়লাভ করে এলাকার উন্নয়নে সবসময় নিজের সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলিউড খ্যাত এই গায়ক। খুব তাড়াতাড়িই পৌঁছে গিয়েছিলেন জনপ্রিয়তার শিখরে। এরপরই তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে, পূর্ণ মন্ত্রী না। ২০১৪ সালে বাবুল সুপ্রিয়কে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। প্রতি হোক আর পূর্ণ, সেই দিকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের কাজের দিকেই মন দিয়েছিলেন তিনি।

এরপর ২০১৯ সালে আবারও ওই কেন্দ্র থেকেই বাবুল সুপ্রিয়কে টিকিট দেয় বিজেপি। সেবার তৃণমূলের তারকা প্রার্থী মুনমুন সেনকে বড় ব্যাবধানে হারিয়ে আবারও জয় ছিনিয়ে নেন বাবু। পরপর দু’বার একই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে বাবুল সুপ্রিয় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি পোর খাওয়া রাজনীতিবীদদের থেকে কোনও অংশের কম যান না।

২০১৯-এ জয়লাভের পর বাবুল সুপ্রিয়কে আবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু দু’বছর যেতে না যেতে মোদী ক্যাবিনেট বিস্তারের সময় বাবুল সুপ্রিয়কে মন্ত্রীপদ খোয়াতে হয়। আর এরপর থেকে রাজনীতি থেকে দূরে সরতে থাকেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

মন্ত্রীত্ব যাওয়ার পর থেকে বাবুলকে তেমন ভাবে আর রাজনীতি দেখা যায়নি। এরপর থেকেই তাঁকে নিয়ে শুরু হয় নানান জল্পনা। বেশ কিছুদিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও দূরে ছিলেন তিনি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে মন্ত্রিত্ব ছিনিয়ে নেওয়াটা ভালো মতো নেন নি বাবুল। এছাড়াও রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কিছু বনিবনাও ছিল তাঁর।

রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একাধিকবার দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তাঁকে শোকজও করা হয়েছিল। আর সেই কারণে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের উপর কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। এটাও তাঁর বিজেপি ছাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ যাওয়ার পর তাঁকে রাজ্য রাজনীতিতে বড় পদ দেওয়ার ভাবনা ছিল কেন্দ্রের, কিন্তু যেখানে রাজ্য সভাপতির সঙ্গেই মনোমালিন্য, সেখানে তিনি আদৌ কাজ করতে পারবেন কী না, সেটা নিয়ে ছিল সংশয়। আর এই কারণেই আজ আচমকাই ফেসবুকে ‘আলবিদা” লিখে বিজেপি ছাড়লেন বাবুল। আগামী দিনে তিনি কী করেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Avatar
Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর