আপনি পাকা বাড়ি পেলেন, আমাকে কি দেবেন? প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশ্নে অনন্য উত্তর দিলেন কৃষক

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে স্বনির্ভর উত্তর প্রদেশ রোজগার প্রকল্প এবং করোনা মোকাবিলা নিয়ে উত্তর প্রদেশ সরকারকে প্রশংসায় ভরালেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও (Yogi Adityanath)। প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, যতদিন না পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক বাজারে আসছে, ততদিন দুই গজের দূরত্ব মেনে চলা এবং মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রথমে তিনি গন্ডার ভিনিতা এবং বহরাইচের তিলকারামের সাথে কথা বলেন। তিনি তিলাকারামকে বললেন – আপনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে একটি বাড়ি পেয়েছেন, তবে আপনি আমাকে কী দেবেন? তিলাকারাম বলেন, আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা  করি যে আপনি যেন সারা জীবন প্রধানমন্ত্রী পদে থাকেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন আপনি আমার জন্য একটি কাজ করুন। নিজের বাচ্ছাদের শিক্ষিত করুন। পড়াশোনা শেখান। কোন রকম সাহায্য লাগলে আমি করব।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ পাবেন এক কোটি মানুষ বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগী আদিত্যনাথ জানিয়ে দেন মূলত পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এই কাজের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। ভিন রাজ্য থেকে যাঁরা কাজ হারিয়ে এসেছেন, তাঁদের প্রথম সুযোগ দেওয়া হবে এই কর্মসংস্থানে।

এই কর্মসংস্থান অভিযান স্থানীয় স্তরে শিল্প তৈরিতে উৎসাহ দেবে। বিভিন্ন মাঝারি শিল্পের সঙ্গে এদের যুক্ত করে রোজগারের পথ খুলে দেওয়াই হবে এই প্রকল্পের লক্ষ্য।

এর মধ্যে ৫০ শতাংশ কর্মসংস্থান হবে মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিমের আওতাধীন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় প্রশাসনকে এই কাজের খসড়া তৈরি করার নির্দেশ দেন। কোন কোন শ্রমিক কি কি কাজে পারদর্শী সেই বিষয়ে তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানানো হয়েছে ১.৮০ কোটি মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিমের কার্ড গ্রাহক। ৮৫ লক্ষ সক্রিয় কর্মী।

ভারতে উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যাই ২৪ কোটি৷ উত্তর প্রদেশ কতটা কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে তা একটা তথ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে৷ ইউরোপের এই চারটি দেশে করোনা সংক্রমণে মোট মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩০ হাজার৷ সেখানে উত্তর প্রদেশে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬০০ জনের৷ এর থেকেই প্রমাণিত উত্তর প্রদেশ সরকার কীরকম তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে৷’

এ দিন অনলাইনে উত্তর প্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলার গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী৷ সেখানেও করোনা সংক্রমণ এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন তিনি৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে কোনওরকম অভিযোগ না করে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং তাঁর সরকার কাজ করতে শুরু করেছিল৷ এমন কী, পিতৃবিয়োগ সত্ত্বেও উত্তর প্রদেশের মানুষের কথা ভেবে যোগী আদিত্যনাথ কীভাবে করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় কাজ চালিয়ে গিয়েছেন, সেকথাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী৷

করোনা সংক্রমণ রুখতে ফের একবার সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘যতদিন না পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক বের হচ্ছে, আমাদের এই জীবাণুর ছড়িয়ে পড়া রুখতে হবে৷ তার জন্য ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই জরুরি৷ বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, বাড়ির বাইরে গেলেই মাস্ক পরা এবং সবথেকে জরুরি হল দুই গজের (ছ’ ফুটের) দূরত্ব বজায় রাখা৷’

সম্পর্কিত খবর