মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী! ফেসবুক এবং গুগল থেকে কোটি টাকার চাকরির অফার পেলেন বাংলার বিশাখ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কঠোর পরিশ্রম, নিজের ওপর ভরসা এবং মেধার ওপর ভর করে যে বিরাট সফলতা হাসিল করা সম্ভব তা যেন আরও একবার প্রমাণিত হল। আর এই কাজ যিনি করে দেখালেন তিনি হলেন বাংলার বিশাখ মন্ডল। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে প্রায় একই সঙ্গে ফেসবুক ও গুগলের মত দুই মহীরুহ সংস্থার কাছ থেকে বিপুল বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি। যার জেরে ফের একবার রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করলেন বিশাখ।

জানা গিয়েছে, গুগলের তরফে বিশাখকে দেওয়া হয় বার্ষিক এক কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকার প্যাকেজের চাকরির প্রস্তাব। যদিও, ফেসবুক আরও একধাপ এগিয়ে তাঁকে বার্ষিক এক কোটি তিরাশি লক্ষ টাকার প্যাকেজের “অফার” করে। এমতাবস্থায়, বিশাখ আগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ ফেসবুকের লন্ডন অফিসে যোগ দিতে চলেছেন।

এদিকে, বিশাখের এই বিরাট সফলতায় যিনি সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন তাঁর মা। জানা গিয়েছে, বিশাখের তিন বছর বয়স থেকেই একা লড়াই করে তাঁকে মানুষ করেছেন মা শিবানী দেবী। এমনকি, একটা সময়ে সংসারের খরচ সামলাতে শিবানী দেবীকে চাকরি নিতে হয় অঙ্গনওয়াড়িতেও। এমতাবস্থায়, ছেলের এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই আপ্লুত তিনি। এই প্রসঙ্গে শিবানী দেবী জানান, “ছেলেকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে সামান্য বেতনে আমি সামলাতে পারতাম না। তাই বাপের বাড়ির সাহায্য ছাড়া এই জায়গায় পৌঁছনো যেত না।”

রামপুরহাটের জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন বিশাখ। তিনি উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে দ্বাদশ স্থান অর্জন করেছিলেন। তারপরেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে তিনি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হন যাদবপুরে। প্রথমে বিশাখ অফার পেয়েছিলেন গুগলের কাছ থেকে। কিন্তু, তারপরেই গত মঙ্গলবার মধ্যরাত্রে তিনি ফেসবুকের প্রস্তাবটি পান। আর তারপরেই তিনি এই সুখবর সবার আগে জানান তাঁর মাকে। পাশাপাশি, বিশাখ তাঁর এই কৃতিত্বের প্রসঙ্গে জানান, “আমার এই সাফল্যের পিছনে মায়ের অবদান বলে বোঝানো যাবে না। খুব খুশি হয়েছে মা। পরিবারের অন্যান্যরাও খুশি হয়েছেন।”

ju

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই বার যাদবপুরের মোট ১০ জন পড়ুয়া বার্ষিক এক কোটি টাকারও বেশি প্যাকেজের চাকরি পেয়েছেন। যা নিঃসন্দেহে এক বিরাট সাফল্য। এই প্রসঙ্গে সহ-উপাচার্য স্যমন্তক দাস জানিয়েছেন যে, ‘‘যাদবপুরে পড়েই ওরা এমন সফল হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়াদের এমন সাফল্যে আমরা আপ্লুত।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর