অবশেষে মৃত্যু হল চীনের ‘ব্রেভ পিগ’ ঝু জিয়ানকিয়াংয়ের, শোকের ছায়া পশুপ্রেমী মহলে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একটি চৈনিক শূকরের মৃত্যুতে চীনের পশুপ্রেমী মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আসলে এই শূকরটি চীনে পরিচিত সাহসী শূকর বা ব্রেভ পিগ নামে। ‘ঝু জিয়ানকিয়াং’ নামক এই বিশেষ শূকরটি তার তীব্র সাহস এবং ইচ্ছাশক্তির জেরে গোটা চীন দেশ জুড়েই ছিল ভীষণ জনপ্রিয়। শুধু তাই নয় চীনের প্রায় কয়েক ডজন কোম্পানি নিজেদের ব্র্যান্ড লোগো হিসেবে ব্যবহার করেছিল এই শূকরের ছবি। তাই তার মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। যদিও জানা গিয়েছে কোনো অসুখ নয় বার্ধক্যের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার।

strong willed pig dying 3

কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন, হঠাৎ একটি সাধারণ শূকর এত বিখ্যাত হয়ে ওঠার কারণ কি? ২০০৮ সালে তীব্র একটি ভূমিকম্প হয় চীনের সিচুয়ান প্রদেশে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল প্রায় ৭.৯। এই ভূমিকম্পে সিচুয়ান প্রদেশের অনেকটাই কার্যত পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। মারা গিয়েছিলেন ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। আহত হয়েছিলেন প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ। এমন তীব্র ভূমিকম্পের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল এই অবলা প্রানীটিও।

ভূমিকম্পের কারণে ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে যায় তার দেহ। আলো জল এবং খাবার ছাড়া প্রায় ৩৬ দিন জীবিত ছিল এই শূকরটি। ৩৬ দিন পর যখন তাকে ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে উদ্ধার করা হয় তখন সে অনেকটা একটি জীর্ণ কুকুরের মত দেখতে। ৩৩০ পাউন্ডের এই শূকরটির ওজন তখন ছিল মাত্র ১১০ পাউন্ড।

এর পরেই এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে চীনের বিভিন্ন সংবাদপত্রে। এমনকি বিদেশি সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয় ‘ঝু জিয়ানকিয়াং’এর এই খবর। অসম্ভব ইচ্ছাশক্তির জেরেই ধ্বংসস্তূপের নিচেও আলো জল ছাড়া বেঁচে ছিল এই শূকরটি। তার ইচ্ছাশক্তিই তাকে বহু মানুষের কাছে করে তুলেছিল ‘আল্টিমেট সারভাইভার’। কঠিন পরিস্থিতিতেও টিকে থাকার প্রতীক হয়ে গিয়েছিল এই প্রাণীটি। আর সেই কারণেই তার নাম হয়ে ওঠে ব্রেভ পিগ। এরপর অবশ্য ৪৫০ ডলার দিয়ে তাকে কিনে নেন জিয়ানচুয়ান মিউজিয়ামের মালিক। নিজের জীবনের শেষ দিন অবধি এই মিউজিয়ামেই ছিল ‘ঝু জিয়ানকিয়াং’। মিউজিয়াম তরফে জানানো হয়েছে, অবশেষে বুধবার রাতে বার্ধক্যের কারণে মারা গিয়েছে এই সাহসী শূকরটি।

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর