বাংলা হান্ট ডেস্ক: দিন দিন বেড়েই চলেছে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ। গতকাল পুড়শুড়ায় একটি জনসভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে হিতে-বিপরীত মন্তব্য করে বসেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু একদিনের ঘটনা খানিকটা অন্যরকম। দিলীপ তার বক্তব্যের মাঝে তুলে এনেছিলেন কাটমানি ইশু। তার মূল লক্ষ্য ছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে কথার ফাঁদে আক্রমণ করা।
কিন্তু ঘটনাচক্রে কথায় কথায় বাঙালি জাতিকেই অপমান করে বসলেন রাজ্য BJP সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি বলেন, “বাঙালি মানেই চোর-চিটিংবাজ হয়ে গেছে।” দিলিপের এই বক্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতারা কটাক্ষ সূরে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “তাহলে কি দিলীপবাবু বাঙালি নন ? উনিও তো তাহলে চোর-চিটিংবাজ।”
গতকাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জনসংযোগ কর্মসূচিতে হুগলির কামারপুকুরে উপস্থিত হন। বিকেল চারটে নাগাদ সোদপুর থেকে পুরশুড়া পর্যন্ত পদযাত্রা করার পর পুরশুড়ায় একটি জনসভাও করেন তিনি। সেখানে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “দিদিমণি কত দিন ভোট আটকাবেন? কেউ যদি মনে করেন, ভোট না করে ক্ষমতা ভোগ করবেন তাঁর কপালে দুঃখ আছে৷ দিদিমণি ভেবেছেন বোধহয় গতবার পঞ্চায়েত, মিউনিসিপ্যালিটি ভোটের মতো গুন্ডা আর পুলিশ দিয়ে জিতে নেবেন৷ আসলে দিদিমণি আপনার দিন শেষ৷ আপনাকে আর কষ্ট করে ১৪ তলায় উঠে নবান্নতে বসতে হবে না৷ আপনার জায়গা কালীঘাট৷ ওখানে চলে যান৷ শান্তিতে থাকুন৷ বাংলার মানুষ বিকল্প খুঁজে নিয়েছে৷”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের উপর ২৮ হাজার কেস দিয়েছে দিদিমণির পুলিশ৷ শুধু আমার নামেই ২২টা কেস দিয়েছে৷ আমি নাকি খুন করতে যাচ্ছি৷ এখনও তো মার্ডার করিনি৷ যদি আমরা শুরু করি তাহলে কিন্তু খুঁজে পাবেন না৷ অফিসের দরজা খোলার লোক পাবেন না ৷ পুলিশ অফিসারদের ধমকানো হচ্ছে যাতে কেস না তুলে নেওয়া হয়৷ আপনি কত কেস দিতে পারেন আমরাও দেখছি৷”
এদিন কাটমানি ইশুতেও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন দিলীপ। তিনি বলেন, তৃণমূল নেতাদের বাড়ির সামনে প্রতিনিয়ত পুলিশ দাঁড়িয়ে। এর একমাত্র কারণ তারা এত কাটমানি নিয়েছেন এবং যেসব মানুষদের থেকে নিয়েছেন তাঁরা এবার বাড়ি বয়ে এসে তাদের টাকা ফেরত চাইছে। এখন তো সব জায়গায় কাটমানি, তোলাবাজি। কেউ ব্যবসা করতে গেলেও তোলা দিতে হচ্ছে। পড়াশোনা করতে গেলেও তোলা দিতে হচ্ছে।’ দিলীপ ঘোষ আরো বলেন, ‘এই কাটমানি ও তোলাবাজি বন্ধ করার একটি মাত্র উপায় তৃণমূলকে প্রত্যেক জায়গায় হারাতে হবে। বাঙালি মানে আজ চোর, চিটিংবাজ হয়ে গেছে। এই বদনাম ঘোচাবার জন্য পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন করতে হবে।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁরা বলছেন, “উনি তো বাঙালি জাতিকেই অপমান করলেন। কেউ কেউ টাকা নিয়েছে। এটা ঠিক। মুখ্যমন্ত্রী জানতে পেরেই ব্যবস্থা নিয়েছেন। কাটমানি ফেরাতে বলেছেন। তা বলে সব বাঙালি চোর, এটা কি বলা যায়?” এবার আগামীদিনে দেখার বিষয় এই ঘটনার জল কোনদিকে গড়ায়।