বাংলাহান্ট ডেস্কঃ এবার প্রশংসায় ভরে উঠল ভারতীয় আবহাওয়া (Weather) দফতরের মুখ। আমফানের (Amphan) পূর্বাভাস সঠিক সময়ে সঠিক দেওয়ায় প্রশংসায় ভরিয়ে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ এজেন্সি বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। সংস্থার মহাসচিবই মানায়েনকোভা মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্রকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, অনেক আগে থেকে সঠিক পূর্বাভাস দেওয়াতেই আরও বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এর আগে ২০১৩ সালে ঘূর্ণিঝড় পিলিনের নিখুঁত পূর্বাভাসের পরও রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পেয়েছিল মৌসম ভবন।
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, ‘আমাদের দেওয়া পূর্বাভাস প্রতিবেশী-সহ অনেক দেশের কাজে লেগেছে শুনে ভালো লাগছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ও অন্যান্য এজেন্সির প্রশংসায় আমরা খুশি। আরও ভালো কাজ করার উৎসাহ পেলাম।’ দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতরের। মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের নিখুঁত পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। আমাদের কলকাতার আঞ্চলিক অফিসকে অপরিহার্য বিভাগের তালিকায় রেখেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পরিষেবার মাধ্যমে মানুষের প্রাণ ও সম্পদ রক্ষা করতে পেরে তা প্রমাণ করতে পেরেছি আমরা।’
উল্লেখ্য, গত ২০ মে বাংলার সুন্দরবনে আছড়ে পড়ে আমফান। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা চিঠিতে বলেছে, অন্তত তিন দিন আগে যে জায়গার উল্লেখ করা হয়েছিল, সেখানেই আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়। আমফানের সৃষ্টি, গতিপথ, তীব্রতা, স্থলভাগে আছড়ে পড়ার স্থান ও সময়, সবই মিলিয়ে দিয়েছেন আবহবিদরা। সমুদ্র কতটা উত্তাল হবে, বৃষ্টির পরিমাণ, ঝড়ের গতিবেগ ঠিক যেমন বলা হয়েছিল, বাস্তবে তা-ই হয়েছে।
তাতে শুধু ওডিশা বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, বিপর্যয় মোকাবিলায় সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশও। তার উল্লেখ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে যে ভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমানো গিয়েছে, তা সকলের কাছে শিক্ষনীয়। বোরো ধান যেটুকু বাঁচানো সম্ভব হয়েছে, তার পুরো কৃতিত্বই আবহবিদদের। পূর্বাভাস পেয়ে প্রশাসন তৎপরতা দেখানোয় কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাই এড়ানো গিয়েছে বহু সংখ্যক মৃত্যুও। তবে জনতা পূর্বাভাসকে পুরোপুরি গুরুত্ব দিলে প্রায় ১০০ প্রাণহানিও দেখতে হত না বাংলাকে। পূর্বাভাসে বিশ্বাস রাখা জরুরি, সেটাই শিখিয়ে দিয়ে গেল আমফান।