বাংলাহান্ট ডেস্কঃ একসময় পশ্চিম বর্ধমান জেলা যা আগে অবিভক্ত বর্ধমান বলে পরিচিত ছিল, সেখানকার বিধানসভা আসন জামুড়িয়া সিপিএমের দুর্ভেদ্য দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। পঞ্চাশ বছর ধরে এই কেন্দ্রে পতপত করে লাল পতাকা উড়েছে। কিন্তু একুশের নির্বাচনে বামেরা তাঁদের শেষ কেল্লাতেও হারল। সিপিএমের তরুণ তুর্কি ঐশী ঘোষকে হারিয়ে ওই কেন্দ্রে জয় হাসিল করে নিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী হরেরাম সিংহ।
ঐশী ঘোষ জামুড়িয়ায় ভোট পেয়েছেন মাত্র ২4 হাজার ৮১৮। তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী হরেরাম সিংহ ভোট পেয়েছেন ৭১ হাজার ২টি ভোট। এছাড়াও বিজেপির প্রার্থী তাপস কুমার রায় পেয়েছেন ৬২ হাজার ৯৫১টি ভোট। সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ ওই কেন্দ্রে ১৪.৮৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন মাত্র। আর নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, ওই কেন্দ্রে ঐশী ঘোষের জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
একুশের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের অবস্থা সবথেকে শোচনীয় হয়েছে। অস্বাভাবিক ভাবে তাঁদের ভোট শতাংশ কমে যাওয়ার পাশাপাশি গোটা বাংলা থেকে বিলুপ্তের পথে তাঁরা। এমনকি বামেদের কাণ্ডারি হয়ে আসা আব্বাস সিদ্দিকীও এবারের নির্বাচনে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি। তবে গোটা রাজ্যের ২৯২ কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র ভাঙড়ের আসনে জয় পেয়েছে সংযুক্ত মোর্চা। সেখানে জিতেছেন আব্বাস সিদ্দিকীর ভাই নওশাদ সিদ্দিকী।
ওই কেন্দ্রে ঐশী ঘোষকে প্রার্থী করা নিয়েও বামেদের মধ্যে অনেক মত দেখা গিয়েছে। অনেকের মতেই ওই কেন্দ্রের মানুষ ঐশীকে চেনেই না। ওই কেন্দ্রে ঐশীর জায়গায় যদি বিদায়ী বাম বিধায়ক জাহানারাকেই টিকিট দিত বামেরা, তাহলে হয়ত ফলাফল অন্যরকম হত। তাঁদের মতে ঐশী শিক্ষিত এবং JNU এর ছাত্রী হতে পারেন, কিন্তু শ্রমিক মহলে তাঁর তেমন পরিচিতি নেই। আর এই কারণে বিগত ৫ দশক ধরে বামেদের দুর্গ বলে পরিচিত জামুড়িয়া কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল।